তিনটি আদালতে ১৬৫৪ জন মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

court1খবর বাংলা২৪ ডেক্স:ন্যায্য পাওনা ফিরিয়ে পাওয়ার দাবিতে শ্রম আদালতগুলোতে করা মামলাগুলো প্রায় ৯৮ শতাংশই রায় হয়েছে শ্রমিকদের পক্ষে। কিন্তু আদালতের আদেশ থাকা সত্বেও এর কোন বাস্তবায়ন নেই। এমনকি আদালতে হাজিরও হচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, এ অপরাধে ১৬৫৪ জন মালিকের বিরুদ্ধে ঢাকার তিনটি আদালত জারি করেছেন গ্রেফতারি পরোয়ানা। কিন্তু আদালতের এমন কঠোর আদেশও আমলে নিচ্ছেন না মালিক পক্ষ। আবার রহস্যজনক কারণে ‘নীরব দর্শক’-এর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষ- আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বছরের পর বছর ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বিপুল সংখ্যক নিরীহ শ্রমিক। সম্প্রতি দৈনিক যুগান্তর এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে বিচারাধীন ৮৯/১৩ ফৌজদারি মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, আয়ুব আলী নামের একজন শ্রমিক গার্মেন্ট কারখানায় লেবার পদে কাজ করছিলেন। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই আয়ুবকে ছাঁটাই করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে তিনি শ্রম আদালতে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলায় আদালত শ্রমিক আয়ুবকে তার পাওনা ২২ হাজার ৭৫৬ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতের আদেশ মানেননি মালিক। পরে আয়ুব ফের ওই মালিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেন। এ মামলায় গত বছরের ১০ অক্টোবর ওই মালিকের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, এছাড়া ঢাকার প্রথম শ্রম আদালতে বিচারাধীন ১২৭/১৪ নম্বর মামলার নথি থেকে জানা গেছে, একটি সিরামিকসে রুহুল আমিন নামের ব্যক্তি ১৯৮৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্কিলড টেকনেশিয়ান হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার শ্রমিক নম্বর ছিল ৯৫৭।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ৩০ এপ্রিল পদত্যাগ করেন। এর আগেই তিনি ওই প্রতিষ্ঠানটির এইচআর বিভাগকে জানিয়েছিলেন তার অসুস্থতার কথা। পদত্যাগের পর ১ মে প্রতিষ্ঠানটি রুহুলকে শুধু প্রভিডেন্ট ফান্ডের পাওনাদি পরিশোধ করে। কিন্তু তার পদত্যাগ জনিত গ্রাইচ্যুটি, ছুটি ও লভ্যাংশের মুনাফা দেয়নি। প্রতিষ্ঠানটির কাছে রুহুল দাবি করেছেন, ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪ টাকা পান। এ মামলাটিতে তারিখের পর তারিখ পড়েই চলেছে।

শ্রম আইন, ২০০৬-এর ২৮৩ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি যদি শ্রম আদালতের কোনো আদেশ পালন করিতে অস্বীকার করিলে অথবা ব্যর্থ হইলে, তিনি তিন মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ড, অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’ ঢাকাসহ সারা দেশের সাতটি শ্রম আদালত রয়েছে। ঢাকায় তিনটি, চট্টগ্রামে দুটি, খুলনাতে একটি ও রাজশাহীতে একটি এবং ঢাকার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল আদালত।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend