‘রাজনীতির চক্রান্তের শিকার, জীবন বাঁচাতে ভারতে পালিয়ে আসি’

28270_f1_0নারায়ণগঞ্জের সেভেন মার্ডারের সঙ্গে কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছে এই হত্যা মামলার মূল আসামি নূর হোসেন। বলেছে, চক্রান্তের শিকার হয়ে জীবন বাঁচাতে কলকাতায় পালিয়ে আসতে হয়েছে।
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াডের জেরার জবাবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে নূর হোসেন বলে, রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হয়েছে সে। আর তাই জান বাঁচাতেই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসতে হয়েছে। মানবজমিনের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। মানজমিন জানায়, গতকাল দুপুরে বিধাননগর পুলিশ কমিশনার অফিসে অ্যান্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াড বা এটিএসের এসিপি অনীশ কুমার সরকার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জানান, একজন অনুপ্রবেশকারীকে যে ধরনের জেরা করা হয় বাংলাদেশী নূর হোসেনকে ঠিক সেই ধরনের জেরা করা হচ্ছে। তবে অনুপ্রবেশের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নূর হোসেন জানায়, সে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নূর হোসেনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি সোমবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই’র মাধ্যমে ইন্টারপোলকে জানানো হয়েছে।

এদিকে, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজ্য সরকার কিংবা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইন্টারপোলের দেয়া রেড এলার্টের আসামি নূর হোসেনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে জানানো হয়নি। বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম বলেছেন, আমরা এখনও সরকারিভাবে জানি না ঠিক কি হচ্ছে, তাই এই নিয়ে তেমন কোন মন্তব্য নেই। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অনুপ্রবেশকারী হিসেবে নূর হোসেনের কাছে সে কবে এসেছে, কোন সীমান্ত দিয়ে এসেছে, ভারতে তার আশ্রয়দাতা কে, ভারতে সে কতবার আসা-যাওয়া করেছে, ভারতের কোন নাগরিকত্ব কিংবা রেশনকার্ড আছে কিনা, ভারতবিরোধী কোন কাজে যুক্ত কিংবা কোন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য কিনা, তার সঙ্গে আর কে কে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে- এসবই এখন জানার চেষ্টা করছে অ্যান্টি টেরোরিস্ট স্কোয়াড।

মানবজমিন সূত্র জানায়, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের পর থেকে তার খরচ মেটাতে বাংলাদেশ থেকে ঘুরপথে মোটা অঙ্কের টাকা আসতো নূর হোসেনের কাছে। সেই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে আসতো নাকি কোন ব্যাংকের মাধ্যমে আসতো সে বিষয়টি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে শোনা যাচ্ছে, কলকাতায় তার নামে বা বেনামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তার মাধ্যমে সে লেনদেন করতো। ভারতে নূর হোসেনের নামে কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে কিনা সে বিষয়ে এটিএস প্রধান জানিয়েছেন, এই বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তদন্ত চলছে। নূর হোসেনকে বন্দি প্রত্যর্পণের আওতায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের বিষয়। এ সম্পর্কে তার কিছু জানা নেই। দু’দিন কেটে গেলেও এখনও বাংলাদেশ থেকে নূর হোসেনের আত্মীয়-পরিবারের সদস্যরা তাকে দেখতে যায়নি। এমন কি ভারতে তার আইনি সহযোগিতা দেয়ার মতো কোন আইনজীবীকেও এখনও নিযুক্ত করা হয়নি। উল্লেখ্য, গত ১৪ই জুন শনিবার ভারতীয় সময় রাত সোয়া আটটায় কলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকা কৈখালির ইন্দ্রপ্রস্থ আবাসনের একটি ভাড়া নেয়া ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তারের পর দফায় দফায় তাকে জেরা করে পুলিশ। নূর হোসেনের সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় তার দুই সহযোগী ওহিদুর জামান সালিম ওরফে সালিম এবং খান সুমন ওরফে বিট্টুকে। সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স আইনের ১৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার উত্তর ২৪ পরগনা জেলা আদালত তিন অভিযুক্তকেই আট দিনের পুলিশি রিমান্ডে নেয়ার নির্দেশ দেয়।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend