ঝিনাইগাতী উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন ৪ ডিসেম্বর

Jhinaigati-Aleageদীর্ঘ এক যুগ পর বিরোধপূর্ণ পরিবেশেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। ৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় স্থানীয় পাবলিক হলে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তৃণমূলের সম্মেলন ও কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিরোধ, হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ২ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলাসহ পুলিশী অভিযানের মধ্যেই ওই সম্মেলন অনুষ্ঠান হতে যাওয়ায় এলাকায় চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক ওই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আযম এমপি, স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার একেএম ফজলুল হক ও কেন্দ্রীয় সদস্য এডভোকেট মমতাজ উদ্দিন মেহেদী। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক আলহাজ্ব এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাঈম।
উল্লেখ্য, ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সাবেক সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন চাঁন ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বেলায়েত হোসেনসহ শীর্ষ কয়েক নেতার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াসহ নানাবিধ অভিযোগে দীর্ঘ প্রায় একযুগ পূর্বে হওয়া কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগ ৯ আগস্ট এসএম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাঈমকে আহবায়ক ও আমিরুজ্জামান লেবুকে যুগ্ম আহবায়ক করে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা দেয়। এতে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ে। নানা অভিযোগে অভিযুক্ত কয়েক নেতাসহ পদবঞ্চিতদের একটি অংশ নবগঠিত আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ওই অবস্থায় আহবায়ক কমিটি উপজেলার ৬৩টি ওয়ার্ড ও ৭টি ইউনিয়ন কাউন্সিলের কাজ সম্পন্ন করে এবং ৪ ডিসেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করে। অন্যদিকে পুরাতন কমিটির অনেকেই নতুন কমিটিতে উঠে আসতে না পেরে আহবায়ক কমিটির বিরুদ্ধে ভিন্ন তৎপরতা শুরু করে। এমনি অবস্থায় উপজেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে সামনে রেখে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ নিজেকে সভাপতি প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে সম্প্রতি যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগ অফিসে অবস্থান নেয়। ২৮ নবেম্বর শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আওয়ামী লীগের আহবায়ক এস.এম আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাঈম দলীয় কার্যালয়ের সামনে পৌছামাত্র সশস্ত্র যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা তার উপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে নাঈম সহ আওয়ামী লীগের কমপক্ষে ১০ নেতাকর্মী আহত হয়। এরপর পেট্রল বোমা নিক্ষেপসহ অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ওই ঘটনার প্রতিবাদে দলীয় নেতা-কর্মীরা সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি হাতে নেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য একেএম ফজলুল হক চানের আশ্বাসে ওইসব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিলেও হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলায় আসামী করা হয় বিবদমান প্রতিপক্ষের প্রায় ২ শতাধিক দলীয় নেতা-কর্মীকে। যাদের অনেকেই পুলিশী গ্রেফতারের ভয়ে বর্তমানে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। এমনি অবস্থায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়ায় নেতা-কর্মীসহ সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend