যৌতুক না পেয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর গায়ে আগুন

Khagrachari_thereport24.comযৌতুক না দেওয়ায় স্বামী মিজানুর রহমান চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সামলা বেগমের (২০) গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছে। বর্তমানে তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
চিকিৎসার ভার বহন করতে না পারায় দরিদ্র বাবা মেয়েকে হাসপাতালে না রেখে এখন বাসায় নিয়ে এসেছেন। সালমা খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার বড়পিলাক গ্রামের এয়াকুব আলীর মেয়ে।
সালমা জানান, গত বছরের ৩০ মার্চ সিন্দুকছড়ির এরফান আলীর ছেলে মিজানুর রহমানের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ৪০ হাজার টাকা যৌতুক দেন সালমার দরিদ্র বাবা এয়াকুব আলী। বিয়ের কয়েক মাস পর মিজান মোটরসাইকেল কেনার জন্য আরও টাকা আনতে সালমার ওপর নির্যাতন শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৭ ডিসেম্বর সালমার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয় মিজান।
সালমার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তাকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ৩০ ডিসেম্বর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তাবে সালমার শ্বশুর এরফান আলীর অভিযোগ, ফেরদৌসী বেগম নামে প্রতিবেশী এক নারীর সঙ্গে ঝগড়া হয় সালমার। পরে সে নিজে শরীরে আগুন দেয়।
প্রতিবেশী গোফরান আলীর অভিযোগ, ওই ফেরদৌসী বেগমের সঙ্গে সালমার স্বামী মিজানুর রহমানের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল।
ওই ঘটনায় সালমার বড় ভাই মো. নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি স্বামী মিজানুর রহমান, শ্বশুর ও শাশুড়িসহ পাঁচজনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গুইমারা থানায় মামলা করেন। তবে আসামীরা এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ইউসুফ মিয়া জানান, সালমার স্বামী মিজানুর রহমানকে গ্রেফতারের জন্য পাঁচ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য আসামীদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে গিয়ে সালমার বাবা এয়াকুব আলী পরিবারের একমাত্র রেশন কার্ড ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। বাড়ির জায়গাও বন্ধক রাখেন তিনি। এক মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে রাখার পর খরচ আর বহন করতে না পারায় অবশেষে সালমাকে বাসায় নিয়ে আসেন বাবা এয়াকুব আলী।
তিনি জানান, টাকা-পয়সা যা ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। ওষুধ কিনতে না পারলে হাসপাতালে রেখে লাভ কি? এছাড়া চট্টগ্রামে গিয়ে মেয়েকে দেখভাল করাও সম্ভব নয়।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend