ডায়রিয়া নিয়ে চার ভুল ধারণা!

গরম আসার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে গেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। পত্রপত্রিকার খবর বলছে, রাজধানীর হাসপাতালগুলো ভরে যাচ্ছে ডায়রিয়া ও বমিতে আক্রান্ত ছোট-বড় রোগীতে। এ সময়ে গরমের কারণে খাবারদাবারে দ্রুত পচন ধরে, জীবাণুর বংশবৃদ্ধি হয় দ্রুত এবং পচনশীল ও জীবাণু আক্রান্ত খাদ্য খেয়ে মানুষ সহজেই পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হয়।

খাদ্যদ্রব্য, বিশেষ করে কাঁচা খাবার মানসম্মতভাবে হিমায়িত ও সংরক্ষণ না করা হলে এগুলো সহজে জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়।

গরমকালে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা আমাদের দেশে। ঠিকভাবে পানি ও লবণ পূরণ করা হলে এটি কখনো গুরুতর আকার ধারণ করে না। বেশির ভাগ ডায়রিয়া এমনিতেই সেরে যায়। কিন্তু ডায়রিয়া ও এর চিকিৎসা নিয়ে এখনো রয়ে গেছে কিছু ভুল ধারণা।

১. উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগীরা স্যালাইন খেতে পারবেন না?

ডায়রিয়া হলেও অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস আছে, এমন রোগীরা সহজে স্যালাইন খেতে চান না। কেননা স্যালাইনে লবণ ও চিনি আছে, তাঁদের আশঙ্কা এটি খেলে ক্ষতি হতে পারে। এটি গুরুতর ভুল ধারণা। প্রতিবার পাতলা পায়খানার সঙ্গে শরীরে প্রচুর পরিমাণে পানি ও লবণ হারায় এবং তা যথাযথভাবে পূরণ না করা হলে রোগীর পানিশূন্যতা, লবণশূন্যতা মারাত্মক আকার ধারণ করে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই রোগী যে-ই হোক, স্যালাইন খেয়ে এই পানি ও লবণ পূরণ করতে হবে। আর এতে যে সামান্য চিনি আছে তা অন্ত্রে লবণ শোষণের কাজে ব্যয়িত হয়।

২. ডায়রিয়ার রোগী স্বাভাবিক খাবার খাবেন?

ডায়রিয়া হলে অন্য যে কারও মতো বাড়িতে তৈরি পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত সব ধরনের স্বাভাবিক খাবারই খেতে হবে। কেননা শরীরে শক্তি সরবরাহের জন্য ক্যালরি তো লাগবেই। ভাত, মাছ, সবজি ইত্যাদি স্বাভাবিক ও সহজপাচ্য খাবার খেতে কোনো বাধা নেই। বিশেষ করে স্তন্যপানরত শিশুরা কোনো অবস্থাতেই বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করবে না।

৩. সারা দিনে এক প্যাকেট স্যালাইন খেলেই চলবে?

স্যালাইন কতটুকু খেতে হবে তা নির্ভর করবে কতবার পাতলা পায়খানা হচ্ছে বা কতটুকু পানি হারাচ্ছেন তার ওপর। ডায়রিয়ার কারণে একজন মানুষ মাত্র কয়েক ঘণ্টায় এক-দেড় লিটারের বেশি পানি হারাতে পারেন। সবচেয়ে সহজ হিসাব হলো প্রতিবার পায়খানা হওয়ার পর দুই গ্লাস করে স্যালাইন খাওয়া। এর বাইরে সারা দিন যথেষ্ট পরিমাণ পানি ও তরল খাবার যেমন স্যুপ, ডাবের পানি বা ফলের রস ইত্যাদি খেতে হবে।

৪. অ্যান্টিবায়োটিক কি জরুরি

সব ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক জরুরি নয়। জরুরি হলো দেহের লবণ ও পানিশূন্যতা পূরণ। প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যেতে পারে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend