গ্রেফতার আতঙ্কে নালিতাবাড়ির ৫ গ্রাম পুরুষ শূন্য
নিজস্ব প্রতিবেদক:
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ডিবি পুলিশের দায়ের করা দুটি মামলায় ১৫ দিন ধরে গ্রেফতার আতঙ্কে নন্নীর পাঁচটি গ্রাম পুরুষশূন্য রয়েছে। ওই গ্রাম গুলোতে দিনের বেলায় অনেককেই কাজকর্ম করতে দেখা গেলেও সন্ধ্যার পর তারা চলে যান নিরাপদ স্থানে।
এলাকাবাসী জানায়, প্রতি রাতে পুলিশের অভিযানের ভয়ে ডেকরাপাড়া, বাজুপাড়া, নয়াপাড়া, বন্ধধারা ও বাইগর পাড়া গ্রামের প্রায় চার হাজার পুরুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এছাড়া পাশ্ববর্তী কন্যাডুবি, আমলাতলী, নন্নীপুর্ব পাড়ার লোকজনও গ্রেফতার আতংকে দিন কাটাচ্ছেন। ইতিমধ্যে পুলিশ ১৩ জনকে আটকের পর ৩ জনকে ছেড়ে দিয়েছে। এদিকে শুক্রবার বিকেলে সরেজমিনে খোঁজ নিতে গেলে ডেকড়া পাড়া গ্রামবাসীরা জানায়, পুলিশ অভিযানের নামে বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে রান্নার চুলা ভেঙ্গে দিয়েছে। ওই গ্রামের গৃহবধু চামেলী বেগম (৪০) বলেন, পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় যদি কোন অঘটন ঘটে এর দায় কে নিবে। এই ঘটনায় নয়াপাড়া গ্রামের এইচএসসি পরীক্ষার্থী আব্দুল কাদিরকে গত রোববার রাতে ধরে নিয়ে সোমবার বিকেলে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এতে আব্দুল কাদির সোমবারের পরীক্ষা দিতে পারেনি। পুলিশের অভিযান থেকে বাদ পড়েনি নয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের পুত্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আব্দুল আওয়াল (৩৫)। তাকেও আটক করে ছেড়ে দেয়।
নন্নী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহমুদ বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত আমরা নিরাপদে ব্যবসা করতে চাই। নিরীহ কাউকে যেন হয়রানি না করা হয়। তবে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি নজরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিরাপরাধ কাউকে হয়রানি করা হয়নি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। নালিতাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম পিপিএম বলেন, নন্নীর ঘটনাটি জেলা থেকে নিয়ন্ত্রন করছে। তবে পুলিশের গায়ে হাত দেয়া ঠিক হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মার্চ ডিবি পুলিশ উপজেলার নন্নীবাজারে মদকসহ হাবিবুর রহমানকে আটক করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে আটক করে মাদক বিক্রেতা শাহিন মিয়াকে। এ সময় স্থানীয়রা জড়ো হয়ে শাহিনকে ছিনিয়ে নিয়ে পাঁচ পুলিশকে গণপিটুনি দিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য আইনে ও পুিলশের কাজে বাধা দেওয়ায় অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।