রূপগঞ্জে আল আমিন হত্যার বিচার চেয়ে বিপাকে মামলার বাদি ও পরিবার

rupgonj
খবর বাংলা২৪ ডেক্স:
রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী নিউ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র আল আমিন হত্যার বিচার চেয়ে থানায় মামলা করে বিপাকে পড়েছেন বাদি আব্দুর রহমান জজ মিয়া। জজ মিয়া তার ছোট ভাই স্কুল ছাত্র আল আমিন খুনের ঘটনায় উপজেলার রূপসী স্লুইস গেইট এলাকার সন্ত্রাসী আমিন উদ্দিন ওরফে ওসি আমিন, সন্ত্রাসী মনির হোসেন ওরফে কানা মনির, মাসুদ ওরফে আকাশ, শিরিন আক্তার, আতিকা, খোরশেদসহ ৬ জনের নাম উলেখ করে ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে এক এপ্রিল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর হতে মামলার প্রধান আসামী খুনি আমিন উদ্দিন ও তার বাহিনীর সদস্যরা মামলার বাদিকে মামলা তুলে নিতে অব্যাহতভাবে মোবাইলে হত্যার হুমকী দিচ্ছে। এতে বাদি ও তার পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এদিকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল খুনি আমিন উদ্দিনসহ অন্য আসামীদেরকে বাঁচাতে ও ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। ঐ প্রভাবশালী মহলটি মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আসামীদেরকে রক্ষা করতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে তদবির করছে। মামলার বিবরন ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহত আল আমিন উপজেলার রূপসী এলাকার নবু প্রধান মিয়ার ভাড়াটিয়া কাঞ্চন মিয়ার পুত্র ও রূপসী নিউমডেল স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র ছিল। তার সঙ্গে একই ক্লাসে লেখাপড়া করতো রূপসী স্লুইস গেইট এলাকার আমিন উদ্দিন ওরফে ওসি আমিনের মেয়ে আতিকা আক্তার। একই ক্লাসে পড়ার সুবাধে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের খবর জানার পর থেকেই সন্ত্রাসী আল আমিন তার মেয়ে আতিকার প্রেমিক আল আমিনকে শোধরানোর জন্য আল আমিনের ভাই জজ মিয়াকে চাপ দেয়। এতেও কাজ না হওয়ায় ওসি আমিনের ছোট ভাই সন্ত্রাসী মনির হোসেন ওরফে কানা মনির ঘটনার চারদিন আগে বাড়িতে গিয়ে শাসিয়ে আসে। গত ২৯ মার্চ রাত ১০টার দিকে প্রেমিক আল আমিনকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে প্রেমিকা আতিকা ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ থাকে। ৩০ মার্চ দুপুর একটার দিকে স্থানীয়রা আল আমিনের জবাই করা ও চোখ উৎপাটন করা লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে স্লুইসগেট এলাকার চরপাড়ার ঘটনাস্থল থেকে স্কুল ছাত্র আল আমিনের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা ওসি আমিনের বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর ওসি আমিনসহ তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়। গোপন সংবাদের ভিক্তিতে পুলিশ ঐদিনই গন্ধর্বপুর এলাকা থেকে আতিকার মা শিরিন আক্তার ও চাচা সন্ত্রাসী মনির হোসেন ওরফে কানা মনিরকে গ্রেফতার করলেও মূল হোতা আমিন উদ্দিনকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মূল হোতা আমিন উদ্দিন রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। ঘটনার দশ দিন অতিবাহিত হলেও খুনি আমিন উদ্দিন গ্রেফতার না হওয়ায় হতাশ বাদি ও তার পরিবার। মামলার বাদি ও নিহত আল আমিনের বড় ভাই আব্দুর রহমান জজ মিয়া জানান, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল খুনি আমিন উদ্দিনকে বাঁচাতে ও ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। ঐ প্রভাবশালী মহলটি মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আসামীদেরকে রক্ষা করতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে তদবির করছে। এছাড়া খুনি আমিন উদ্দিনসহ মামলার অপর আসামীরা মোবাইল ফোনে তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হত্যা মামলা প্রত্যাহার না করলে তার ভাই আল আমিনের মত পরিনতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দেন। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান মীর বলেন, স্কুল ছাত্র আল আমিন খুনের ঘটনার মূল হোতা আমিন উদ্দিনসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। মূল হোতা আমিন উদ্দিনসহ অন্য আসামীরা পলাতক থাকায় তাদেরকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। তবে খুব শীঘ্রই তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend