রূপগঞ্জে নিবন্ধনহীন হাজারও অটোরিকশা : অবৈধ পথে চার্জ হচ্ছে ব্যাটারি
খবর বাংলা২৪ ডেক্স:
একটি রিকশার জন্য নিবন্ধনের বিধান থাকলেও রূপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে দাপটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাজারো নিবন্ধনহীন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এর ফলে সরকার কেবল বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে না, এসব অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জ দেয়া হচ্ছে অবৈধ বিদ্যুতে। ফলে প্রতিদিন সিস্টেম লসের খাতায় খরচ হচ্ছে প্রচুর বিদ্যুৎও। যদিও সাশ্রয়ী ভাড়ায় এসব অটোরিকশায় মানুষ চলাচল করতে পারছেন, কিন্তু নিবন্ধনের বালাই না থাকায় মাত্রাতিরিক্ত অটোরিকশার কারণে রাস্তায় এগুলো যানজটেরও অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) এক কর্মকর্তা বলেন, চলাচলকারি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কোন সংখ্যা বলতে পারছিনা। কারণ এসব অটোরিকশা চলছে কোন রকম নিবন্ধন ছাড়া। যে কারণে এগুলোর কোন পরিসংখ্যানই বিআরটিএ অফিসে নেই। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, বিদেশ থেকে কোন মোটরযান আমদানি করলে প্রথমেই এর মালিক বা আমদানিকারককে সরকারের পরিবেশ অধিদফতর থেকে ছাড়পত্র নিতে হয়। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র হওয়ার পর বিআরটিএ সদর দফতরে আবেদন করতে হয় চলাচলের অনুমোদনের জন্য। তখন বিআরটিএ সদর দফতরের কারিগরি কমিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এর অনুমোদন দিলে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিআরটিএ অফিস থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। তারপরই কেবল এসব মোটরযান বৈধ লাইসেন্সধারী চালকের মাধ্যমে চালানো যায়।
যেসব ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে, এগুলোর জন্য পরিবেশ অধিদফতরের কোন ছাড়পত্রই নেয়া হয়নি। সেই কারণে রাস্তায় চলাচলের অনুমোদনের জন্য বিআরটিএ’র কাছেও আবেদন করা হয়নি। সেই কারণে স্থানীয় বিআরটিএ অফিসেরও নিবন্ধন দেয়ার সুযোগ নেই। যদি পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র আনাও হয়, তহলেও এগুলোর নিবন্ধন দেয়া সম্ভব নয়। কারণ, নিবন্ধন দিতে হলে একটি মোটরযানের ইঞ্জিন নম্বর এবং চেসিস নম্বর থাকতে হয়। কিন্তু এসব ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কোন ইঞ্জিন নম্বর এবং চিসিস নম্বরের বালাই নেই। আর এখন স্থানীয়ভাবেও প্রচুর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা তৈরি করা হচ্ছে। যে কারণে এত বিপুল পরিমাণ অবৈধ অটোরিকশা রাস্তায় দেখা যায়।
দেখা গেছে, এত বিপুল পরিমাণ অটোরিকশা জব্দ করলে সেগুলো রাখার জায়গা পাওয়া যায় না। থানায়ও এত বিস্তর জায়গা নেই। তবে অটোরিকশা থামিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কেবল ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করে যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়নি, তাদের আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু দেখা যায়, ৫০০ টাকা জরিমানা দিয়ে আবার অটোরিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। ভারী মোটরযান, অটোরিকশা এবং মোটরসাইকেলের জন্য পৃথক ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া হয়। অথচ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকের সিংহভাগেরই কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। ফলে পুরো অটোরিকশাই চলছে অবৈধ প্রক্রিয়ায়। প্রথম প্রথম যখন এসব অটোরিকশা রাস্তায় চলাচল করে, তখন বেআইনিভাবে পৌরসভা থেকে নিবন্ধন দেয়া হতো। অথচ এসব কর্তৃপক্ষের রিকশার নিবন্ধন দেয়ার বিধান থাকলেও অটোরিকশার নিবন্ধন দেয়ার কোন বিধানই নেই। পরবর্তীতে এ ধরনের নিবন্ধনও বন্ধ হয়েছে। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু জাফর রাশেদ বলেন, রূপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে অবৈধ ভাবে চলাচল করা অটোরিকশার বিরুদ্ধে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেয়া হবে।