তিস্তার পানি নিয়ে সরগরম রাজনীতি
খবর বাংলা২৪ ডেক্স:
বাংলাদেশের অন্যতম দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী ২২ এপ্রিল তিস্তা অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি দেয়া হয়েছে এবং জামায়াতের পক্ষে আজ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। বিএনপি ও জামায়াত মূলত তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল এবং এই দাবীতে তারা গত ৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচন বয়কট করে।
কিন্তু নির্বাচনের পরে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে উপজেলা নির্বাচনে তারা অংশ নেয়। এখন দল দুটি কি তিস্তা ইস্যুকে ধরে মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে? আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগই বা কিভাবে দেখছে তাদের এই কর্মসূচিকে?
বিএনপির পক্ষ থেকে সংসদ বর্জন, হরতাল, অবরোধ ইত্যাদি নানা কর্মসূচি সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত সাধারণ নির্বাচন যাতে অংশ নেয়নি বিএনপি কিংবা তাদের শরীক জামায়াত ইসলামী।
ওদিকে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে বিচারের কাঠগড়ায়। একজনের ইতিমধ্যেই ফাঁসি কার্যকর হয়েছে, কয়েকজনের বিচারের রায় হবার অপেক্ষায়।
জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নিলেও সম্প্রতি উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত অংশ নেয় এবং সেখানে তাদের সাফল্য ছিল উল্লেখযোগ্য। কিন্তু এখন দল দুটি কর্মসূচি দিচ্ছে তিস্তার পানি নিয়ে। আজ ছিল জামায়াতের দেশব্যাপী বিক্ষোভ। কেন্দ্রীয় ভাবে ঢাকায় মহানগর জামায়াতের পক্ষে তেজগাঁ শিল্প এলাকায় এক মিছিল বের করা হয়।
তেজগাঁও পুলিশের পক্ষে বলা হয় মিছিল থেকে গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
আর তিস্তার ব্যারেজ অভিমুখে লংমার্চের যাত্রা শুরু করবে বিএনপি আগামী ২২ এপ্রিল। পথে রংপুরে তারা সমাবেশও করবে। বলছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির।
“এই সমাবেশগুলোতে আমরা আমাদের যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে, তিন কোটি মানুষের জীবন জীবিকা বিপন্ন হচ্ছে এই বিষয়গুলো আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরবো। এবং সরকারের ওপর আমরা একটা চাপ সৃষ্টি করতে চাই।ভারতের সাথে বিষয়টি নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে কথা বলা প্রয়োজন এবং প্রয়োজনে এটাতে আন্তর্জাতিক ফোরামেও তোলা দরকার।“
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলছেন, বিএনপি মূলত কর্মিদের চাঙ্গা করতে চাইছে। “বিএনপি যে কর্মসূচি দিয়েছে তেমন রাজনৈতিক কর্মসূচি তারা দিতেই পারেন। একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে তারা হয়তো দলকে চাঙ্গা করবেন। এটা রাজনৈতিক। তবে এটা পদযাত্রা হবে না গাড়ি যাত্রা হবে তা বলা মুশকিল।
তারা জানান, আমরা এখানে আপত্তির কিছু বলছি না। আমরা দেখছি যে এটা যেন শান্তিপূর্ণ হয়, কোন গোলযোগ যাতে না হয়, এটাকে ইস্যু করে তারা যেন শান্তি শৃঙ্খলার বিঘ্ন না ঘটায়।
কিন্তু তাহলে তত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে যে আন্দোলন, সেই দাবী থেকে কি বিএনপি সরে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নে জবাবে মি আলমগীর বলছেন, “একেবারেই না। এটা তো আমাদের জাতির অস্তিত্বের প্রশ্ন। এটা এখন সবচেয়ে বড় ন্যাশনাল ইস্যু। এটা জাতীয় স্বার্থেই প্রয়োজন।“
অবশ্য মি ইমাম বলেন দ্বিপাক্ষিক ভাবেই ভারতের সাথে তিস্তা নিয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হচ্ছে এবং এটি নিয়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে যাবার এখনও কোন চিন্তা সরকারের নেই এবং তাতে কোন লাভ হবে বলেও তারা মনে করেননা।
সূত্র : বিবিসি