লেডি টিউটর আবশ্যক, আড়ালে…
এত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তিনি নিজের কাজ ফেলে নগরীর বিভিন্ন ছাত্রী হোস্টেলের ছাত্রীদের প্রাইভেট টিউশনি দেয়ার জন্য ব্যস্ত সময় পার করেন। নগরীর বিভিন্ন ছাত্রী হোস্টেলগুলোর গেটের সামনে ‘লেডি টিউটর আবশ্যক’ বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে দিয়ে আগ্রহী ছাত্রীদের টিউশনি দিতে সহযোগিতা করতেন। এরপরও মেয়েদের সাহয্যকারী ‘ম্যাজিস্ট্রেট’ ও ‘পুলিশ কর্মকর্তা’ ফয়েজ আলীকে আটক করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম তাকে নগরীর ষোলশহর দু’নম্বর গেট এলাকা থেকে আটক করে।
এ প্রসঙ্গে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গোয়েন্দা) বাবুল আক্তার বাংলামেইলকে বলেন, ‘ফয়েজ আলী মূলত নগরীর প্রতারক চক্রের একজন সদস্য। ভিজিটিং কার্ডে ম্যাজিস্ট্রেট আবার ফেসবুকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সে মানুষের সাথে বিশেষ করে মহিলা ও কলেজ ছাত্রীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। এরকম অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে আটক করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘ফয়েজ আলী একজন পেশাদার প্রতারক। প্রতারণার বিভিন্ন কৌশল সে ব্যবহার করে মানুষকে প্রতারিত করে। সে শুধু একা নয়, তার সাথে এরকম একটি সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তাদেরও গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।’
পুলিশ জানায়, বিভিন্ন সময়ে ফয়েজ আলীসহ সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা নগরীর বিভিন্ন ছাত্রী হোস্টেলের গেটের সামনে ‘লেডি টিউটর আবশ্যক’ লেখা বিজ্ঞাপন দিয়ে আগ্রহী ছাত্রীদের আকৃষ্ট করে। এরপর তারা তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে থাকে। সম্প্রতি এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী বিজ্ঞাপন দেখে ফয়েজ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই ছাত্রীকে ফয়েজ টিউশনি দেয়ার জন্য প্রথম মাসের বেতনের অর্ধেক তাকে দেয়ার শর্ত দিলে ছাত্রীটি রাজি হন। এরপর ওই তরুণীকে টিউশনি করারস্থলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন নগরীর চকবাজার এলাকায় একটি হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে তার সঙ্গে জোরপূর্বক ছবি তুলে ও ভিডিও করে তার মাকে ফোন করে ব্ল্যাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ফয়েজ।
মাসখানেক আগে নগরীর স্টেশন রোড এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে গিয়ে ফয়েজ নিজেকে নগর পুলিশের ডবলমুরিং জোনের সহকারী কমিশনার পরিচয় দেয়। এরপর নিজের প্রভাব কাটিয়ে সপ্তাখানেক বিনা খরচে হোটেলে থেকে ফয়েজ সেখান থেকে চম্পট দেন। এ ঘটনাটিও পুলিশের নজরে আসে।
বাবুল আক্তার জানান, ফয়েজ আলী শুধু লেডি টিউটরদের নিয়েই প্রতারণা করে ক্ষান্ত হননি। তিনি প্রবাসীর স্ত্রীদের টার্গেট করে তাদের বাসায় টিউশনি নেন। এরপর ওই স্ত্রীকে ফাঁদে ফেলে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেন। এ ধরনের প্রতারণা করতে গিয়ে আগ্রাবাদ এলাকায় তিনি একবার গণপিটুনির শিকার হন।