ভারতে সরকারপরিবর্তন চায় বিএনপি

downloadখবর বাংলা ২৪ডেক্স:

ভারতে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।  দলটি মনে করে, বাংলাদেশের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় ফেলেছিল ভারতের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস দল। এ কারণে চলমান লোকসভা নির্বাচনে ভারতের শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন চায় বিএনপি। ভারতের আসাম রাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক যুগশঙ্খ গতকাল এক প্রতিবেদনে এ বক্তব্যই তুলে ধরেছে।

যুগশঙ্খের প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্কের মাত্রা অন্য যেকোনও সময়ের চেয়ে ভালো। বাংলাদেশের দশম জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে এ মাত্রা অনেক গুণ বেড়েছে। বিএনপিবিহীন নির্বাচনের ব্যাপারে সারা বিশ্ব বিরোধিতা করলেও ভারতের কূটনীতিক সহায়তায় পার পেয়ে গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাছাড়া ভারতের সবচেয়ে পুরনো দল কংগ্রেস ও এর সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধির পরিবারের সঙ্গে দারুণ ব্যক্তিগত সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তাই বিতর্কিত নির্বাচনের পরও আওয়ামী লীগ সরকারকে রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিকসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগিতা করে যাচ্ছে কংগ্রেস সরকার। কিন্তু ভারতের লোকসভা নির্বাচনের পর নতুন দল সরকার গঠন করলে আওয়ামী লীগ সরকার সেই সুবিধা পাবে কি-না তা নিয়ে ইতোমধ্যে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।
তবে সুবিধা হোক আর না হোক, ভারতের রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পক্ষে বিএনপি। কারণ বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে বিএনপিকে বেশি রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় ফেলেছে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস। এ জন্য লোকসভা নির্বাচনে ভারতের শাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তন চায় তারা। ভারতের চলমান লোকসভা নির্বাচনকে তাই গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি।
যুগশঙ্খের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি মনে করে, গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ‘বিতর্কিত’ নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতাসীন করার ক্ষেত্রে ভারতের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে। বিএনপি মনে করে, কংগ্রেসের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অনেক বিষয়ে তারা সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। তাই এখন বাংলাদেশের বিরোধীদল মনেপ্রাণে চাচ্ছে, ইউপিএ জোট সরকারের পরিবর্তন। এ ক্ষেত্রে বিজেপি জোট এনডিএকে সমর্থন করছে তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতবিরোধিতার বিষয়টি বরাবরই সামনে নিয়ে আসে বিএনপি। সব সময়ই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভারতের কাছে দেশ ‘বিকিয়ে’ দেওয়ার অভিযোগ করে তারা। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে এখন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির দিকে তাকিয়ে বিএনপি।
সম্প্রতি বিবিসির এক সাক্ষাৎকারে বিএনপির শীর্ষনেতা ড. ওসমান ফারুক বলেছেন, লোকসভা ভোটের মাধ্যমে ভারতে যেই ক্ষমতায় আসুক না কেন তাদের স্বাগত জানাবে বিএনপি। কিন্তু ভারতের আগামী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির সম্ভাবনাই এখনও পর্যন্ত বেশি দেখা যাচ্ছে। গুজরাট দাঙ্গায় মুসলিম নিধনের ঘটনায় ইতোমধ্যে বিতর্কিত মোদি। নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হলে সেটিকে বিএনপি কীভাবে দেখবে?
এ প্রশ্নে ফারুক বলেছেন, ‘ভারতে ৮২ কোটির বেশি মানুষ ভোট দেবে। সেখানে যদি নরেন্দ্র মোদি বিজয়ী হয়ে আসেন তাহলে তো আমাদের কিছু বলার থাকতে পারে না। আপনি যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তাহলে জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে তাকেই মেনে নিতে হবে।’
তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনেও দুই দেশের কূটনীতিক ও অন্যান্য বিষয়ে বিশেষ কোনও হেরফের হবে না। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। আর যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, তাদের সঙ্গে কাজ করবে আওয়ামী লীগ সরকার।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend