কঠোর আন্দোলন করার শক্তি নেই বিএনপির!

১৮ দলীয় জোটের বয়কটের মধ্যদিয়ে নির্বাচন করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ১০ জাতীয় সংসদের যাত্রা শুরু করার পরও সরকারের বিরুদ্ধে কোন আন্দোলনে নামার সাহস পাচ্ছে না বিএনপি। তবে সরকারকে হটাতে সংসদের বাইরে ছিটকে পরা বিএনপি নানা আল্টিমেটাম দিয়ে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। তবে কোন আল্টিমেটামই সরকারের কাছে ধোপে টিকছে না। অথচ দলের তৃণমূল কর্মীরা কোন আল্টিমেটাম চাচ্ছে না। তার চায় আন্দোলনের কর্মসূচি। বারবার এ দাবি করলেও কঠোর আন্দোলনের আভাস নেই দলের মূল পরিকল্পনায়। সর্বশেষ দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া উপজেলা নির্বাচন শেষ হলেই চুড়ান্ত আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে বলে ঘোষণা দেন। কিন্তু সে লক্ষ্যে তৃণমূল নেতৃবৃন্দের সাথে ধারাবাহিক বৈঠক করে হতাশা যেন আরো বেড়ে গেছে।timthumb.php
দলীয় সূত্রে জানা যায়, তৃণমূল নেতৃবৃন্দের সাথে মত বিনিময়ের ধারাবাহিকতায় ১৬ এপ্রিল বুধবার দলের চেয়ারপারসন বৈঠক করেন ময়মনসিংহ উত্তর ও সুনামগঞ্জ জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে। বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ১৫ এপ্রিল সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ১৩ এপ্রিল নওগাঁ ও নেত্রকোনা এবং ১০ এপ্রিল পঞ্চগড়, সৈয়দপুর, নীলফামারী জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন বেগম খালেদা জিয়া।
গত ১ মার্চ খালেদা জিয়া রাজবাড়ী সফরে গিয়ে সমাবেশে ঘোষণা দিয়েছিলেন- উপজেলা নির্বাচন শেষ হলে দলগুছিয়ে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন শুরু হবে। ওই আন্দোলনের জন্য দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রস্তুুতি নেয়ার আহবান জানান তিনি। মূলত এর পর থেকেই শুরু হয় দল গোছানোর প্রক্রিয়া। পাশাপাশি চলতে থাকে উপজেলা নির্বাচনও।
আর বিগত আন্দোলন সংগ্রাম ব্যর্থ হওয়ার কারণে সন্দেহের তীরটা প্রথমেই যায় ঢাকা মহানগরের নেতাদের দিকে। বিষয়টি বিভিন্ন সময় দলের সভাসমাবেশ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বক্তব্যেও উঠে আসে। তাই সর্বপ্রথমই উঠে আসে ঢাকা মহানগর কমিটি পূনর্গঠনের বিষয়টি। কারণ বিগত সময় তত্বাবধায়ক নিয়ে টানা আন্দোলনে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হলেও রাজধানী ঢাকায় তেমন সারা ফেলতে পারেনি আন্দোলন।
সবশেষ ঢাকা মহানগর নেতাদের ব্যর্থতার চরম চিত্র ফুটে ওঠে গত ২৯ ডিসেম্বর বেগম খালেদা জিয়া আহুত মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচিতে। সেদিন সরকারি দলের প্রতিরোধ আর আইনশৃংখলা বাহিনীর গ্রেফতার নির্যাতন ডিঙ্গিয়ে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় জড়ো হলেও ঢাকার নেতাদের সাড়া মেলেনি। আর এজন্যই ব্যর্থতার তীর যায় ঢাকা মহানগর কমিটির দিকে। তাছাড়া দলের বিভিন্ন সভা সমাবেশেও বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। দাবি জানানো হয় রাজপথের পরীক্ষিত নেতাদের হাতে নেতৃত্ব দেয়ার। সে লক্ষ্যে উদ্যোগও নেয়া হয় ঢাকা মহানগর কমিটি পুণর্গঠনের। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত সে প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়নি।
শেষ পর্যন্ত ঢাকা মহানগর কমিটি পূনর্গঠন ছাড়াই দলের চেয়ারপারসন মনোনিবেশ করেন বিএনপির দু:সময়ে গর্জে ওঠা গ্রামগঞ্জের সেই তৃণমূল নেতাদের দিকে। সরকার পতনের চুড়ান্ত আন্দোলনে যেতে ফের তৃণমূল নেতাকর্মীদের উপরই ভরসা করছেন তিনি। সে লক্ষ্যে কাজও শুরু হয়েছে। সারাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করছেন খালেদা জিয়া। বৈঠকে সংস্লিষ্ট এলাকার তৃণমূল নেতাকর্মীদের সমস্যা- অভিযোগ শুনছেন তিনি। সে সাথে আগামী দিনের সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য নানা দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। পাশাপাশি যে সব এলাকার কমিটি ইতোমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে সেগুলো পূনর্গঠন করে আহবায়ক কমিটি করে দিচ্ছেন তিনি।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend