হামিদ মিরের ওপর হামলায় আইএসআইকে দায়ী
পাকিস্তানের প্রখ্যাত সাংবাদিক হামিদ মিরের ওপর হামলার দায় এখনো কোনো পক্ষ স্বীকার করেনি। তবে ওই হামলার জন্য পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাকে (আইএসআই) দায়ী করেছেন হামিদ মিরের পরিবার।
গতকাল শনিবার করাচিতে অজ্ঞাতনামা বন্দুকধারীদের গুলিতে আহত হন হামিদ মির। তাঁর শরীরে তিনটি গুলি লেগেছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, হামলার কয়েক ঘণ্টা পর হামিদ মিরের ভাই আমির মির এ ঘটনার জন্য আইএসআইয়ের প্রধান বা সংস্থাটির অন্য কর্মকর্তাদের দায়ী করেছেন।
জিয়ো টিভিতে আমির মির অভিযোগ করেন, আইএসআই পাকিস্তানকে ঘুণপোকার মতো খেয়ে ফেলছে। আইএসআইয়ের পরিচালক জহির-উল ইসলাম বা অন্য কর্মকর্তারা তাঁর ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করছেন।
আমির মির দাবি করেন, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তাঁর কাছে হামিদ মির জীবনের হুমকির কথা জানিয়েছেন।
এদিকে হামিদ মিরের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে আইএসআই। একই সঙ্গে এ ঘটনা নিয়ে কোনো গুজব না ছড়াতে অনুরোধ জানিয়েছে প্রভাবশালী সংস্থাটি।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, পাকিস্তানের বেসরকারি টেলিভিশন জিয়ো টিভির নির্বাহী সম্পাদক হামিদ মির গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে করাচি বিমানবন্দর থেকে জিয়ো নিউজের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পথে শেরে ফয়সাল এলাকায় নাথা খান সেতুর কাছে পৌঁছালে তাঁর গাড়ি লক্ষ্য
করে বন্দুকধারীরা গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামিদ মিরই হচ্ছেন একমাত্র সাংবাদিক, যাঁকে আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেন অন্তত দুবার সাক্ষাত্কার দিয়েছেন। হামিদ মিরের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসাইন। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতেও এই হামলার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ বলে পরিচিত হামিদ মির পাকিস্তানের কট্টরপন্থীদের কাছে শত্রু বলে বিবেচিত। গতকালের ঘটনার আগেও তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ২০১২ সালের নভেম্বরে ইসলামাবাদে হামিদ মিরের গাড়ির নিচে আধা কেজি বিস্ফোরক পাতা হয়। পরে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী স্কোয়াড গিয়ে তা উদ্ধার করে।
হামিদ মির বাংলাদেশেও বেশ পরিচিত নাম। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার-এ তিনি বিভিন্ন সময়ে লিখেছেন। হামিদ মিরের বাবা ওয়ারিস মিরকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধু হিসেবে সম্মাননা দেয় বাংলাদেশ সরকার। গত বছরের মার্চে বাবার সম্মাননা গ্রহণ করতে বাংলাদেশে এসেছিলেন হামিদ মির।