পরকীয়া বাধা দেওয়া শেরপুরের শিল্পী ঢাকায় খুন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ স্বামীর পরকীয়া বাধা দেওয়ায় শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের ঘিনাপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের কন্যা আকলিমা জাহান শিল্পীকে বিয়ের ১০ বছর পরেও একমাত্র ৭ বছরের শিশু সন্তান শুভকে রেখে না ফেরার দেশে অকালেই চলে যেতে হল।
বাদীর এজাহার সূত্রে জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের টাঙ্গারিয়া পাড়া গ্রামের মৃত আলমাছ উদ্দিনের ছেলে হাফিজুর রহমান ওরফে সংগ্রামের সহিত ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক একই উপজেলার ঘিনাপাড়া সাকিনের হাবিবুর রহমানের কন্যা শিল্পী বেগমকে দশ বছর পূর্বে লক্ষাধিক টাকার যৌতুক দিয়ে বিয়ে দেয়। শিল্পিকে বিয়ের পূর্ব থেকেই সংগ্রাম ঢাকা সাভার এলাকাই ব্যাবিলিয়ন ওয়াশিং প্লান ফ্যাক্টরীতে কাজ করত। বিয়ের পরপরই শিল্পিকে নিয়ে সাভার থানাধীন এ/পি বাসা নং- এ/৮৪, ব্যাংক কলোনীতে জনৈক বীর বিক্রম মোশারফ হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকত। দুরর্দান্ত ও লম্পট প্রকৃতির সংগ্রাম গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজের সুবাদে একাধিক মেয়েদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। রাস্তায় রাস্তায় বেড়ে ওঠা সংগ্রাম নিজের বেতনের টাকা ও কোম্পানির কেমিক্যাল চুরির টাকা হাতে পেয়ে ধরাকে শরাজ্ঞান করতে শুরু করে। ডিউটির পরে নিজেকে বেশির ভাগ সময় মদ্যপান ও মেয়েলি নেশায় আসক্ত করে ফেলে। কয়েক দফায় শশুড় বাড়ি থেকে টাকা নেওয়ার পরও যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পূণরায় টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকে। বেশ কয়েকবার পিতার কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা হল না ৬ এপ্রিল ২০১৪ তে।
ঘরে ৭ বছরের শিশু শুভ ও তার স্ত্রী শিল্পীকে রেখেই প্রতিনিয়ত অনেক ধরনের মেয়ের সাথে পরকীয়া করতে থাকে এবং ঐসব মেয়েদেরকে বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে উচ্চ বেতনে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। চাকরি না দিয়ে প্রত্যেকের সাথে বিয়ের প্রলোভনে স্ত্রীকে রেখে পরকীয়া করতে থাকে। তার পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল ঘাতক সংগ্রাম অপরসহযোগীদের সহায়তায় শিল্পিকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে স্ট্রোক করে মারা গেছে বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য সাভারস্থ এনাম মেডিক্যালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করলে সংগ্রাম হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। এবং তার ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার করলে অন্য পরিচয় দিয়ে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পায়।
এঘটনায় গত ৬ এপ্রিল ২০১৪ সাভার থানায় সংগ্রামের মা সহ তিনজনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হলেও অজ্ঞাত কারণে আসামীরা ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে অপর দিকে মামলার বাদী মোঃ জসীম উদ্দিনকে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য ঘাতক সংগ্রামের গ্রামের বাড়িতে খোজ নিয়ে বিভিন্ন লোকের সাথে কথা বলে জানা গেছে ইতিপূর্বে গ্রামে থাকা অবস্থায় নিজ গ্রামের একটি মেয়েকে উত্যক্ত করার অভিয়োগ রয়েছে। এছাড়াও শৈশব থেকেই সে বিভিন্ন চুরি ডাকাতি করায় এলাকাবাসীর চাপে গ্রাম থেকে ঢাকায় চলে যায়। তারপর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে হেল্পারের কাজ করত। সর্বশেষ বেশ কিছুদিন যাবৎ সাভারে অবস্থান নিয়ে একের পর এক অপকর্ম করতে থাকে। কয়লা শত ধুলেও ময়লা যায় না সংগ্রাম তা প্রমাণ করল এলাকাবাসীর কাছে। এলাকাবাসী সহ সমাজের বিবেকবান মানুষ জানায যে, ঘাতক সংগ্রামের শাস্তি নিশ্চিত করলে হয়ত আর কোন শিল্পিকে স্বামীর হাতে এভাবে বলি হতে হবে না।