প্রেম ও অপহরণের কারণেই মিরপুরের হত্যাকাণ্ড?
কিশোরীর সঙ্গে প্রেম ও তাকে অপহরণের ঘটনার জের ধরে রাজধানীর মিরপুরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ ও এলাকাবাসী দাবি করেছে।
গতকাল রাতে মিরপুরের দক্ষিণ পীরেরবাগে বটতলার গলিতে কাইয়ুম ও জাহাঙ্গীর নামের দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, তাঁরা ওই কিশোরীর স্বজন হতে পারেন।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন খানের ভাষ্য, কিশোরীর বয়স ১২ থেকে ১৪ বছর। তার বাড়ি পীরেরবাগের বটতলার গলিতে। গত শুক্রবার থেকে ওই কিশোরীকে পাওয়া যাচ্ছিল না। তদন্ত করে জানা গেছে, বটতলা এলাকার রং মিস্ত্রি বিল্লালের সঙ্গে ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কিশোরীর পরিবার তা মেনে নেয়নি। কিশোরীকে খুঁজে না পাওয়ায় তার পরিবারের সদস্যরা গতকাল রাতে বটতলার গলিতে বিল্লালের বড় বোন পারভীনের বাসায় যান। সেখানে তাঁদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কিশোরীর পরিবারের এক সদস্য পারভীনকে চড় মারেন। এ সময় পারভীনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁদের হাতাহাতি হয়। পরে কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা সেখান থেকে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে দুটি মোটরসাইকেলে করে আরও কয়েকজন যুবক পারভীনের বাসায় যান। তাঁদের মধ্যে নিহত জাহাঙ্গীর ও কাইয়ুম ছিলেন বলে পুলিশের দাবি। পরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
পারভীনের প্রতিবেশী নাসরিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাত সাড়ে ১১টার পর চিত্কার শুনতে পাই। দুটি মোটরসাইকেলে করে পারভীনের বাসায় কয়েকজন যান। হইচই শুনে দরজা লাগিয়ে দিই। রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে পুলিশ এসে জানায় বাইরে দুটি লাশ পড়ে আছে।’ হত্যাকাণ্ডের পরে বটতলা এলাকার পরিস্থিতি অনেকটাই থমথমে। বেশির ভাগ দোকান বন্ধ। এলাকাবাসী কেউ এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। অনেকে বলেন, তাঁরা এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন খান জানান, নিহত জাহাঙ্গীর ও কাইয়ুম ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্য। এ ব্যাপারে তিনি এখনো নিশ্চিত নন।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা হয়নি বলে তিনি জানান।
ওসি সালাউদ্দিন খান জানান, ওই কিশোরীর বাড়ি পীরেরবাগ এলাকায়। তদন্তের স্বার্থে তিনি কিশোরী বা তার পরিবারের পরিচয় জানাতে চাননি। নিহত জাহাঙ্গীরের রাজধানীর মনিপুরে একটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকান রয়েছে বলে জানা গেছে। তাঁর স্ত্রীর নাম পুতুল। তিনি বরিশালে রয়েছেন। হত্যার পরে জাহাঙ্গীরের মুঠোফোন থেকে পুলিশ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। নিহত কাইয়ুমের বাড়িও পীরেরবাগে বলে পুলিশ জানায়।