রক্তক্ষয়ী হামলায় ক্ষুব্ধ রাশিয়া
পূর্ব ইউক্রেইনে স্লোভিয়ানস্ক শহরের কাছে রুশপন্থিদের একটি তল্লাশিকেন্দ্রে রক্তক্ষয়ী বন্দুকযুদ্ধে অন্তত তিনজন নিহতের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে রাশিয়া।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলেছে, এ হামলার পেছনে আছে ইউক্রেইনের কট্টর ডানপন্থি গ্রুপ ‘রাইট সেক্টর’। একই অভিযোগ করেছে পূর্ব ইউক্রেইনের রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও।
রাশিয়ার একটি টিভিতে রাইট সেক্টরের নেতা দিমিত্র ইয়ারোসের নাম লেখা একটি বিজনেস কার্ডও দেখা গেছে। এক বিবৃতিতে মস্কো বলেছে, “বন্দুকধারীদের উস্কানিতে রাশিয়া ক্ষুব্ধ। এ হামলার ঘটনার মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী ও উগ্রবাদীদেরকে নিরস্ত্র করার ব্যাপারে কিয়েভ কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবই প্রতিফলিত হয়েছে”।
তবে `রাইট সেক্টর’ হামলা চালানোর কোনোরকম অভিযোগ অস্বীকার করে এ হামলার দায় চাপিয়েছে রাশিয়ার বিশেষ বাহিনীর ওপর। ওদিকে, ইউক্রেইনের এক কর্মকর্তা বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটিকে দুষ্কৃতকারীদের মধ্যকার গোলাগুলি বলে অভিহিত করেছেন।
রাশিয়াপন্থিরা সঙ্কট নিরসনের আন্তর্জাতিক উদ্যোগের তোয়াক্কা না করে এখনো পূর্ব ইউক্রেইনের বিভিন্ন সরকারি ভবন দখল করে রাখার মধ্যে এ ঘটনা ঘটল।
ঘটনাটি মস্কো এবং ইউক্রেইনের পশ্চিমা সমর্থিত সরকারের মধ্যে বাকযুদ্ধ উস্কে দিয়েছে। সঙ্কট নিরসনে জেনেভায় গত সপ্তাহে হওয়া চুক্তি মেনে চলার বিষয়টি নিয়ে একপক্ষ অপরপক্ষকে প্রশ্ন করছে।
কিয়েভে ইউরোপের সহযোগিতা ও নিরাপত্তা সংগঠনের বিশেষ মিশন প্রধান এরতোগ্রুল আপাকান বলেন, ইউক্রেইন সঙ্কট সমাধানের লক্ষ্যে উপনীত জেনেভা চুক্তি রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকে মানতে রাজি করানোর জন্য ডোনেস্কে যাবেন তার ডেপুটি।
বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় রাশিয়া, ইউক্রেইন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিকরা ইউক্রেইনের চলমান সঙ্কট নিরসনে ওই চুক্তিতে পৌঁছান।
চুক্তির আওতায় ইউক্রেইনে অবৈধভাবে সরকারি ভবন দখল করে রাখা অস্ত্রধারীদেরকে নিরস্ত্র হওয়া এবং সব ভবন বৈধ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া, সব পক্ষকে কোনোরকম সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন কিংবা উস্কানিমূলক কর্মকান্ড থেকে বিরতও থাকতে বলা হয়। কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদীরা তাৎক্ষণিকভাবে এ চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে।
এরই মধ্যে পূর্ব ইউক্রেইনে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়ে পড়েছে। জেনেভা চুক্তি ব্যর্থ হলে পূর্ব ইউক্রেইনে আরো রক্তক্ষয় ঘটার আশঙ্কা আছে। সেইসঙ্গে ক্রেমলিনে আরোপ হতে পারে কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাও।
শনিবার রাত দুইটার দিকে রুশপন্থি অস্ত্রধারীদের ওপর হামলার পর ঘটনাস্থলে দুটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখার কথা জানান সাংবাদিকরা। নিহতদের একজনের মাথা ও মুখে গুলি লাগে। নিহত আরেকজন ছিলেন ছদ্মবেশী পোশাক পরিহিত।
কিয়েভের সরকারি কর্মকর্তারা বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। রাতে কী ঘটেছিল তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে বলেও জানান তারা।