সম্ভ্রমের মূল্য ভাগাভাগি!
খবর বাংলা২৪ ডেক্স: অসহায়ত্বের সুযোগে তরুণীকে ধর্ষণ করে তালতো ভাই। পরে বিষয়টি নিয়ে থানায় চলে দেন-দরবার। সম্ভ্রমের মূল্য নির্ধারণ হয় দেড় লাখ টাকা। তবে, ধর্ষিতাকে দেয়া হয় ৫০ হাজার। বাকি একলাখ পুলিশের সামনেই ভাগভাগি করে নেয় দালালচক্র। খোদ থানাতেই এ কাজটি করে বীরদর্পে চলে যায় দালালচক্রের সদস্যরা। ঘটনাটি ঘটে শনিবার গভীর রাতে।
সূত্র জানায়, ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা ধর্ষণের শিকার তরুণী ও পার্শ্ববর্তী রায়পুর উপজেলার চরপাতা গ্রামের মোস্তফার ছেলে জসিম (২৫) সম্পর্কে একে অপরের তালতো ভাই-বোন। প্রেমের সম্পর্ক ধরে গত শুক্রবার রাতে জসিম ফোনে তার তালতো বোনকে ফুসলিয়ে এক বন্ধুর সহযোগিতায় জোরপূর্বক একটি মোটরসাইকেলে তোলে। তাকে নিয়ে যায় তার রায়পুরের এক আত্বীয়ের বাড়িতে। সেখানে তাকে রাতভর ধর্ষণ করে জসিম।
সূর্যোদয়ের আগেই জসিম তার তালতো বোনকে একটি মাইক্রো বাসে তুলে রায়পুর থেকে ফরিদগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয়। পথে ফরিদগঞ্জের গৃদকালিন্দিয়ায় টহল পুলিশ গাড়িটি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ধর্ষিতা তালতো বোন পুলিশকে ঘটনা খুলে বলে। পুলিশ দুই জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
এরপর জসিমের পক্ষে প্রভাবশালী লোকজন তাকে ছাড়িয়ে নিতে তৎপরতা শুরু করে। সারাদিন দর কষাকষি শেষে শনিবার গভীর রাতে থানায় বসেই তালতো বোনের ইজ্জতের মূল্য নির্ধারণ হয় দেড় লাখ টাকা। তবে, তার বাবার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দিয়ে বের করে দেয়া হয় থানা থেকে। আর পুলিশের সামনে বাকি এক লাখ টাকা ভাগাভাগি করে নেয় দালালচক্রের সদস্যরা।
এদিকে, ওই তরুণীর বাবা মেয়ের ইজ্জতের মূল্যে দেড় লাখ টাকা নির্ধারণ হলেও ৫০ হাজার টাকা বুঝে পাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, জসিমের লোকজন বড় মেয়েকে তালাকের হুমকি দিয়ে মামলা করতে দেয়নি।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমূল হক জসিম ও তার কথিত প্রেমিকাকে আটকের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ওই মেয়েটি ভাল চরিত্রের নয়। ভিকটিমের পক্ষে কেউ ধর্ষনের মামলা দিতে রাজি হয়নি।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘তাদের আটকের পর এলাকার এক জনপ্রতিনিধিসহ কয়জন মিলে তা মিটমাট করে দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে মেয়ের পক্ষকে টাকা দেয়ার কথা শুনেছি। এর বাইরে কত টাকা কাকে কিভাবে দেয়া হয়েছে বা নেয়া হয়েছে তা আমার জানা নেই।’