মায়ের লাশের সঙ্গে আট মাস!

মায়ের লাশের সঙ্গে আট মাস!
খবর বাংলা ২৪ ডেক্স: আরব্য উপন্যাসে নানা বিচিত্র ঘটনার বর্ণনা রয়েছে, যা পড়ে পাঠকরা বিস্ময় লুকাতে পারেন না। কিন্তু বাস্তবে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা আরব্য উপন্যাসের কাহিনীকেও হার মানায়। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে তেলসমৃদ্ধ দেশ কুয়েতে এমনই এক ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। অবশ্য এটি পড়ে অনেকেই ব্যাথিত হয়েছেন, কারো চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়েছে অশ্রু।
 দীর্ঘ আট মাস পর মেয়েরা আবিষ্কার করেছেন তাদের মা আর বেঁচে নেই। অথচ তারা একই ছাদের নিচে থাকতেন। কিন্তু মায়ের প্রাণ পাখি যে কবে খাঁচা ছেড়ে বেরিয়ে গেছে তা দেখার সময় হয়নি দুই মেয়ের। তারা ব্যস্ত ছিলেন নিজেদের দৈনন্দিন কাজকর্ম নিয়ে। মায়ের দিকে তাকানোর ফুসরত মেলেনি তাদের। মা মরে ছিলেন নিজের ঘরে,কম্বলের তলায়। আর তারা ভেবেছিলেন মা বোধহয় ঘুমিয়ে আছেন। দীর্ঘ আট মাস পর তারা একদিন কৌতুহলবশত কম্বল সরান। ততদিনে মায়ের মৃতদেহ কঙ্কাল হয়ে গেছে।
 বুধবার স্থানীয় আল ওয়াতন দৈনিকে এ খবর প্রকাশিত হয়।
 মা ও দুই মেয়ে একই ফ্লাটের ভিন্ন কামরায় থাকতেন। তদন্তকারী কর্মকর্তাদের মেয়েরা জানান, তারা প্রতিদিন সকালে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে যেতেন। ফিরতেন রাতে। ফিরে দেখতেন মা কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে আছেন। তারা মনে করতেন, তারা বেরিয়ে যাওয়ার পর তাদের মা ঘুম থেকে উঠে খাওয়া দাওয়া এবং প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করেন। তারা বাড়ি ফেরার আগেই আবার তিনি ঘুমিয়ে পড়েন।এভাবেই কাটছিল তাদের দিন।
 এরই মধ্যে একদিন মারা যান বৃদ্ধা। মেয়েরা এ খবর জানতেও পারেননি। কেননা তারা ছিলেন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। মায়ের খোঁজ খবর নেয়ার সময়  তাদের ছিল না। এভাবে কেটে যায় দীর্ঘ আট মাস। কোনো কারণে একদিন মায়ের গায়ের কম্বল সরান তারা। আবিষ্কার করেন, মা মরে কঙ্কাল হয়ে আছেন। এরপর তারা পুলিশকে খবর দেন।
 তবে এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে অভিযুক্ত করেনি। কেননা ওই বৃদ্ধার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।
 ঘটনাটি প্রকাশিত হওয়ার পর দেশ জুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। আল ওয়াতনের অনলাইন বহু পাঠক নানা মন্তব্য করেছেন। তাদের অধিকাংশই দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং মায়ের প্রতি অবহেলার জন্য মেয়েদের তীব্র সমালোচনা করেছেন।  এক পাঠকের মন্তব্য হল,‘ একটি মুরগী মরলেও তো মানুষ তার গন্ধ পায়। আর তোমরা নিজেদের মায়ের লাশের গন্ধ পেলে না, এটা কীভাবে সম্ভব?’
 কোনো কোনো পাঠক পত্রিকার এ খবরের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সেলিম নামের এক পাঠকের মন্তব্য হলো,‘ ধরে নিলাম ওই মেয়ে দুটি মানসিকভাবে সুস্থ নয়। আমি নিশ্চিত যে, বৃদ্ধার অবশ্যই কোনো না কোনো আত্মীয় ছিল। গত আট মাসে তাদের তো একবার অন্তত তার খোঁজ নেয়ার কথা ছিল।’
 ওয়াজেদ নামের এক পাঠক বলেন,‘ আট মাস ধরে একটা লাশের সঙ্গে বসবাস করা অসম্ভব। আমি এ ঘটনা বিশ্বাস করি না।’
 সত্যি, বাস্তব কখনো কখনো বুঝি রূপকথাকেও হার মানায়!

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend