জালিয়াতি, অতঃপর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক!
খবর বাংলা২৪ ডেক্সঃ শিক্ষক জাতির বিবেক। জাতি গঠনের কারিগর। কিন্তু সেই শিক্ষকই যদি হন অযোগ্য, নিয়োগ পেতে নেন প্রতারনা আর দূর্নীতির আশ্রয়, তাহলে কী হতে পারে? রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক আবু জাফর মো. ইমরান এমনই এক ঘটনা ঘটিয়েছেন।
সেই সাথে রংপুর শহরের কামাল কাছনা এলাকার মো. আশরাফ আলীর ছেলে আবু জাফর মো. ইমরান নিয়োগ পেতে গিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
দৈনিক কালের কণ্ঠের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় অবস্থান করায় কিছু বলতে পারছি না। রংপুর ফিরে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলব।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক নিয়োগের জন্য গত বছরের ৩ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাছাই বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী নিয়োগ পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আবু জাফর মো. ইমরান। ওই বাছাই বোর্ডে বিশেষজ্ঞ সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরই ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম আবদুল মজিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর একজন অধ্যাপক।
বাছাই বোর্ডের সুপারিশের পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১১ মার্চ বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন ইমরান। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই তাঁর নিয়োগ পাওয়া নিয়ে আর্থিক লেনদেনের গুঞ্জন শোনা যায় ক্যাম্পাসে। কারণ ওই বোর্ডে তাঁর চেয়ে আরো অনেক ভালো ফলাফলধারী প্রার্থী থাকলেও তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে গত বুধবার বিভাগে তাঁর বিবিএ এবং এমবিএর সনদ জালিয়াতির বিষয়ে আসা একটি উড়ো চিঠিকে কেন্দ্র করে। এর পরেই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন ওই শিক্ষক। তবে ওই উড়ো চিঠির সূত্র ধরে জানা যায়, প্রভাষক পদে আবেদনের সময় তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ফলাফলে সিজিপিএ দেখান ৩.৬৩ এবং এমবিএর ফলাফলে ৩.৫৪।
তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০১-২০০২ সেশনে ভর্তি হয়ে তিনি ২০০৫ সালের বিবিএ ফাইনাল পরীক্ষায় (অনুষ্ঠিত ২০০৭) সিজিপিএ ২.৭৩ পান এবং ২০০৬ সালের এমবিএ প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষায় (অনুষ্ঠিত-২০০৮) সিজিপিএ পেয়েছেন ২.৬০।
তবে তাঁর এমবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফলাফল পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর রোল নম্বর ছিল ০২০২৭৬০৩ এবং তিনি শাহ মখদুম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।
সূত্র: দৈনিক কালের কণ্ঠ