উজানের পানির ওপর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে

উজানের পানির ওপর সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে
খবর বাংলা২৪ ডেক্স: উজানের পানিসম্পদের ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের সাবেক পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক পানি বিশেষজ্ঞ ড. এস আই খান।

শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কনফারেন্স লাউঞ্জে প্রগতিশীল প্রকৌশলী ও স্থপতি ফোরাম আয়োজিত ‘মৃতপ্রায় তিস্তা, মরুকরণের পথে বাংলাদেশ, অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সরকারগুলোর ক্রমাগত ব্যর্থতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলেন।
এস আই খান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আরবিট্রেশনের মাধ্যমে সমুদ্র জলসীমার উপর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে জাতিসংঘের ষষ্ঠ কমিটির মাধ্যমে উজানের পানি সম্পদের উপর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কারণ গঙ্গা-পদ্মা, ব্রক্ষ্মপুত্র-যমুনা, বরাক-মেঘনা এগুলো ভারতের একক নদী নয়, বরং বহুদেশীয় নদী। আমাদের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠন করে, প্রয়োজনীয় তত্ত্ব-উপাত্ত নিয়ে ভারতের সাথে বসতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রবেশের আগে গঙ্গা নদীর ৬৫ শতাংশ পানি আসে নেপাল থেকে, ১০ শতাংশ আসে চীন থেকে, বাকি ২৫ শতাংশ পানি আসে ভারত থেকে। একইভাবে ব্রক্ষ্মপুত্র নদের ৬০ শতাংশ পানি আসে চীন ও ভুটান থেকে এবং বাকি পানি আসে ভারত থেকে। ১৯৭৭ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা পানি বণ্টনের চুক্তি হয়েছিল। চুক্তিতে উল্লেখ আছে সমতা, সুষম এবং কোনো পক্ষের ক্ষতি না হয় এ ন্যায়নীতির ভিত্তিতে উভয় সরকার অন্যান্য অভিন্ন ক্ষেত্রে পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদন করবে। কিন্তু বাংলাদেশকে না জানিয়ে সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে আসা ৫৪টি নদীর মধ্যে অধিকাংশ নদীতে বাঁধ দিয়ে ভারত পানি সরিয়ে নিচ্ছে।’
বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘সরকার মানব পতাকা তৈরির জন্য লাখ লাখ মানুষকে জড়ো করতে পারে, জাতীয় সংগীত গেয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার জন্য ৫০ লাখ মানুষকে একত্রিত করতে পারে। অথচ দেশের নদীগুলো বাঁচাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে না। যখন যে সরকারই ক্ষমতায় এসেছে ভারতের কাছ থেকে নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে উদাসীন ভূমিকা পালন করেছে।’
বক্তারা বলেন, আন্তর্জাতিক নীতিমালা ও কনভেনশন লঙ্ঘন করে ভারত একতরফাভাবে উজানের পানি সরিয়ে নেয়ার কারণে বাংলাদেশের নদীর পানিপ্রবাহ মারাত্মকভাবে কমে গেছে। এছাড়া পাতাল পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি উঠছে না এবং সমুদ্রের লোনা পানি দেশের অভ্যান্তরে প্রবেশ করায় পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দেশ ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে।’
বৈঠকে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট পানি বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশলী ম এনামুল হক, বুয়েটের পানিসম্পদ কৌশল বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. সাব্বির মোস্তফা খান, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গাজী এম এ জলিল, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহীন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend