নালিতাবাড়ীতে হাতি আক্রান্ত এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
খবর বাংলা ডেক্স: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ে বন্য হাতির আক্রমণে প্রায় মাস ব্যাপি ১৫টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষের রাত কাটে হাতি আতঙ্কে। পাহাড়ের সমতলে বোর ধান পাকার কারণে প্রায় প্রতি রাতেই হাতিদল নেমে আসে খাবারের সন্ধানে। হাতির আক্রমণ থেকে ঘর বাড়ী গাছপালা ফসলি জমির ধান রক্ষা করার জন্য পাহাড়ি মানুষ পটকা ফুটিয়ে, মশাল জ্বালিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।
সরেজমিনে এলাকাবাসী জানায়,হাতিগুলো প্রায় ১৫ বছর আগে ভারতের পিক পাহাড় থেকে দলছুট হয়ে এখানে আসে। ভারতের কাঁটাতারের বেড়া ও বিএসএফের বাধার কারণে হাতির দল আবাসস্থলে ফিরতে পারেনি। প্রথমে হাতির সংখ্যা ছিল ২০-২৫টি। বর্তমানে ৫০টিরও বেশি। প্রতি বছর ধান ও কাঠাল পাকার মৌসুমে হাতির পালটি খাদ্যের সন্ধানে পাহাড়ের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত চষে বেড়ায়। বর্তমানে দলটি দিনের বেলায় পোড়াগাও ইউনিয়নের লালটিলা পাহাড়ে অবস্থান করছে। সন্ধ্যা নামলেই পালটি লোকালয়ে হানাদেয়। এক সপ্তাহে পোড়াগাঁও,নয়াবিল,
রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের প্রায় ৪০-৫০ একর বোর ধান খেয়ে ফেলেছে। বর্তমানে পাহাড়ি ১৫টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষের হাতি আতঙ্কে রাত কাটে ।
ক্ষতিগ্র¯ত নিরঞ্জন রবিদাশ(৫০) জানান, হাতিরপাল আমার ২০শতাংশ জমির ধান খাইয়া শেষ কইরা দিচ্ছে। দুই রাতে নাকুগাঁও গ্রামে হানাদিয়া প্রায় ২০ একর জমির পাকা ধান খাইয়া হালাইছে। মশাল জ্বালাইয়াও এগরে খেদাইন যাইতাছে না। অহন আমরা নিরুপায়। সাবেক মেম্বার রবিউল ইসলাম (৪৫)ও নাকুগাঁও গ্রামের আনোয়ার হোসেন(৪২) জানান,ধান পাকার মৌসুমে হাতিপাল প্রতি বছর হানাদেয় বাড়ি ঘর আর ফসলি জমিতে। ১৫ দিন ধরে এদের উপদ্রপ বেশি লোকজন সন্ধ্যা হলেই হাতি আতঙ্কে থাকে। সীমান্তে জেনারেটরের মাধ্যমে আলোকিত করতে পারলে হয়তো কিছুটা রক্ষা পাওয়া সম্ভব। পোড়াগাঁও ইউনিয়নের কালাপানি গ্রামের অসিম রাকসাম(৬০) জানায়,সারা দিন মামারা(হাতির দল) লালটিলার গভির জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। বিকাল বেলায় আস্তে আস্তে নিচে নামতে থাহে। প্রত্যেক রাইতে আমরা মশাল দিয়া মামাগরে ফিরায়া দেই।
শপথ নেয়ার পরদিনই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএপি নেতা একেএম মুখলেছুর রহমান রিপন হাতি আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন কালে উপস্থিত ছিলেন নয়াবিল ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী দেওয়ান,নন্নী বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক মোফাচ্ছেল হোসেন, সমাজ সেবক মাহবুবুর রহমান রিটন, উপজেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক, জাহাঙগীর আলম মেম্বার,চার আলী গ্রামের সাজাহান কামাল প্রমুখ। উপজেলাচেয়ারম্যান বলেন, হাতি আক্রান্ত গ্রামবাসী নিদারুন কষ্টে আছে। আমি নিজেও তাঁদের সাথে হাতি তাড়িয়েছি। মশাল জ্বালাতে পাহাড়িদের এক ড্রাম কেরোসিন তেল দেওয়া হয়েছে।স্থানীয় কৃষকদেও ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।এ ব্যাপারে উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অবহিত করেছি।