ঢাকায় অবস্থানরত মফস্বলের চিকিৎসকদের তালিকা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মফস্বলের কর্মস্থল ফেলে ঢাকায় বসবাসরত চিকিৎসকদের তালিকা তৈরি করতে আগামী সপ্তাহের মধ্যে কমিটি গঠন হতে পারে। কমিটিতে থাকছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, যুগ্ম স্বাস্থ্য সচিব, অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার পরিচালকসহ শীর্ষ পর্যায়ের সরকারি আরো কয়েক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
অ্যাডহক ভিত্তিতে গত মহাজোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের গ্রামের কর্মস্থলে কমপক্ষে দুই বছর থাকতে বাধ্য করার নীতিমালা প্রণয়নের কথাও ভাবছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া অ্যাডহক চিকিসকরা নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত হচ্ছেন কী না, তা দেখভাল করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত ‘পরিদর্শন টিম’ও নতুন করে মাঠে নামছে।
জানায় যায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত এক বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ঢাকার অতিরিক্ত চিকিৎসকদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন। এ সময় মন্ত্রী গ্রামের কর্মস্থলে চিকিৎসকদের কমপক্ষে দু্ই বছর থাকতে বাধ্য করার নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব দেন বলে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন।
এছাড়া গ্রামের কর্মস্থলে চিকিৎসকদের থাকতে বাধ্য করতে তাদের প্রতি চাপ সৃষ্টি করতে ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন’র (বিএমএ) নেতাদের প্রতিও সম্প্রতি আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তথ্যমতে, গ্রামে চিকিৎসক রাখার কথা বলে গত মহাজোট সরকার অস্থায়ী (অ্যাডহক) ভিত্তিতে প্রথমে চার হাজার ১৩৩ জন চিকিৎসককে নিয়োগ দেয়। এরপর স্বাস্থ্যসেবা তৃণমূলে পৌছে দিতে জরুরিভাবে অ্যাডহক ভিত্তিতে আরো সাড়ে তিন হাজার সহকারী সার্জন, পর্যায়ক্রমে আরো ৫৮২ জন সহকারী সার্জনকে নিয়োগ দেয় সরকার। মহাজোট সরকারের আমলে প্রায় দেড় হাজার চিকিৎসক বিসিএসের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে ঢোকেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র মতে, ঢাকার সরকারি কয়েকটি হাসপাতালে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি চিকিৎসক রয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০ শয্যার স্ত্রীরোগ বিভাগে চিকিৎসক আছেন ১৫০ জন। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগে শয্যা ৭৯টি। এখানে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপক আছেন ১৬ জন। রেজিস্ট্রার ও সহকারী রেজিস্ট্রার ১১ জন। এছাড়া অবৈতনিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আছেন প্রায় ৩০ জন।
অন্যদিকে ঢাকার বাইরে সারাদেশে সরকারি চিকিৎসকের পদ প্রায় ২৪ হাজার ৩০০টি। এগুলোর মধ্যে আট হাজারের কিছু বেশি (৩৩ শতাংশ) পদ শূন্য। সারাদেশে ৪৮১টি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসকের পদ আছে নয় হাজার ১৫০টি। দুই হাজার ২৯৪টি পদে চিকিৎসক নেই। অর্থাৎ উপজেলা পর্যায়ে ২৫ শতাংশ পদ শূন্য।
সূত্র: দৈনিক যায়যায়দিন