সাভার ও আশুলিয়ায় দুজন খুন
খবর বাংলা২৪ ডেক্স: রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের নগরকোন্ডা এলাকায় আজ শনিবার রাতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে রহিম বাদশা (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেনাতুল্লা (৫০) নামে অপর এক ব্যক্তি।
এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে আশুলিয়ার মধ্য গাজীরচটে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন আব্দুল কুদ্দুস (২৮) নামের এক যুবক।
রহিম সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ইছাকান্দা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। আর কুদ্দুস রাজধানীর গুলশানের একটি বস্তিতে থাকতেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত রহিম একাধিক মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তিনি দীর্ঘদিন জেলও খেটেছেন। বছর চারেক আগে জেল থেকে বের হয়ে নগরকোন্ডা এলাকায় থেকে জমির ব্যবসা করতেন তিনি।
সাভার মডেল থানা পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ সন্ধ্যা থেকে রহিম ও তাঁর ঘনিষ্টজন সাভারের বনগাঁওয়ের বেনাতুল্লা নগরকোন্ডা বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে কথা বলছিলেন। সাতটার দিকে মোটরসাইকেলে করে তিন যুবক এসে রহিমকে ডেকে দোকানের বাইরে নিয়ে যান। এর পর তাঁর মাথা ও পেটে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন। এ সময় বেনাতুল্লা এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁর বুকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে রহিম মারা যান। আর বেনাতল্লাকে গুরুতর অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় দফাদার ব্রজেশ্বর শীল ও নগরকোন্ডা গ্রামের ফারুক হোসেন বলেন, ‘বছর চারেক ধরে রহিমকে আমরা এই এলাকায় দেখছি। তিনি এখানে থেকে মাটির ব্যবসা করতেন। কারও সঙ্গে তাঁর বিরোধ ছিল কি না, তা আমাদের জানা নেই। আর যারা তাঁকে হত্যা করেছেন, তাঁরাও এলাকার কারও পরিচিত নন।’
নিহত রহিমের ভাই মো. মোমিন বলেন, তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে যেসব মামলা ছিল, সেগুলোর সবই নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁর (রহিম) বিরুদ্ধে নতুন করে কোনো মামলা হয়নি। তিনি বলেন, জমির ব্যবসা নিয়ে নতুন করে কারও সঙ্গে তাঁর বিরোধ সৃষ্টি হতে পারে। ওই বিরোধের জের ধরে তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিম বলেন, কোনো বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন রহিমকে হত্যা করে থাকতে পারে। হত্যার পেছনে আরও কোনো কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছেও বলেও জানান তিনি।
এদিকে গতকাল রাতে সাভার বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি রেখে কুদ্দুস গাজীরচটে তাঁর বোনের বাসায় যাচ্ছিলেন। রাত ১২টার দিকে মধ্য গাজীরচটের রাশিদ মার্কেটের কাছে পৌঁছালে কয়েকজন ছিনতাইকারী তাঁর কাছ থেকে অর্থ ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার পর কুদ্দুস ওই এলাকার দুই বন্ধু আরিফ ও হাবিবকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁরা হালিম নামের সন্দেহভাজন একজনকে ছিনতাইকারী চিনে ফেলেন। এ সময় তাঁরা ওই ব্যক্তির কাছে টাকা ও মুঠোফোন ফেরত চান। এতে হালিম উত্তেজিত হয়ে কুদ্দুসের পেটে ও বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিত্সক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ আজ সকালে হাসপাতালে গিয়ে ময়না তদন্তের জন্য লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে নিহতের বড় ভাই সেলিম আজ আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।