মিসরে ব্রাদারহুড প্রধানসহ ৬৮৩ জনের ফাঁসির আদেশ

34696_Badieখবর বাংলা২৪ ডেক্স: মিসরের একটি আদালত সোমবার ৬৮৩ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মুসলিম ব্রাদারহুডের দলটির সর্বোচ্চ নেতা মোহাম্মদ বদিও রয়েছেন। সাইয়েদ ইউসুফ নামের যে বিচারক আজ রায়টি দিয়েছেন, তিনিই ২৪ মার্চ এক রায়ে ৫২৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। তিনি সোমবার আগের রায়টি সংশোধন করে ৪৯২ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশের বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। বাকিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। খবর আলাজাজিরা, আল আহরাম, বিবিসির।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১৪ আগস্টে একটি থানায় হামলা চালিয়ে এক পুলিশ অফিসারকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার প্রতিবাদে রাবা ও নাহদা স্কয়ারে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানানোর সময় ওই সহিংসতার সৃষ্টি হয়। মুরসি সমর্থকেরা দাবি করেছেন, সামরিক বাহিনীর ইন্ধনেই ওই সহিংসতার সৃষ্টি হয়েছিল।
এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, দাঙ্গা সৃষ্টি, সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস, থানায় আক্রমণ ও সহিংসতায় উস্কানি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে বিচারক তার রায়ে জানান।
বিচারক জানিয়েছেন, ২১ জুন এ মামলার চূড়ান্ত রায় দেয়া হবে। এর পর রায় মূল্যায়নের জন্য আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড মুফতির কাছে তা পাঠানো হবে। তার সুপারিশের ভিত্তিতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মিসরে ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়ে থাকে।
খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বিচারকাজ শেষ হয়ে যায় বলে এক আইনজীবী জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরাও এ ধরনের দ্রুত বিচারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এই মামলাটি মিসরের বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা ‘হত্যা’ করেছে বলে জানিয়েছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক গবেষক।
রায় প্রকাশের পর আদালতের বাইরে অবস্থানরত অভিযুক্তদের স্বজনেরা চিৎকার করতে থাকেন, বেশ কয়েকজন নারী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
মামলা পর্যবেক্ষণকারী অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষক মোহাম্মদ আলমেসিরি বলেন, এতে মৌলিক ন্যায়বিচার লঙ্ঘিত হয়েছে। তিনি বলেন, এই মামলাটি মিসরের বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা ‘হত্যা’ করেছে।
বিচার চলাকালে আসামিপক্ষের বেশ কয়েকজন আইনজীবী বিচারকের অপসারণের দাবি করেন। তারা বিচারককে ‘কসাই’ হিসেবে অভিহিত করেন।
২৫ আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী মোহাম্মদ আবদেল ওয়াহেব বলেন, আদালতে মাত্র পাঁচ মিনিটের শুনানির পরই রায় ঘোষণা করা হয়। এর আগে তিনি  জানিয়েছিলেন, বিচারক আসামিপক্ষের কোনো যুক্তি শুনতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
আদালতের বাইরে অপেক্ষমাণ আবদেল নাসের হোসাইন বলেন, তার ভাইসহ পাঁচ স্বজনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। এই স্বজনদের মধ্যে মাত্র একজন মুসলিম ব্রাদারহুডের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
সাইয়েদ ইউসুফ নামের এই বিচারকই ২৪ মার্চ এক রায়ে ৫২৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। ওই সময়ে ব্যাপক অনিয়মের জন্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো তার তীব্র সমালোচনা করেছিল। সোমবার অবশ্য তিনি তার আগের রায় কিছুটা সংশোধন করেন।
সোমবার যাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে মুসলিম ব্রাদারহুডের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বদি রয়েছেন। রায়ের সময় ৬৮৩ জনের মধ্যে মাত্র ৭০ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
মোহাম্মদ বদিকে গত আগস্টে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend