সরকার সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন যাত্রায় জার্মানির অধিকতর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন। বর্তমান সরকার ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশেকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার মাধ্যমে দেশের নাগরিকদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে আমরা জার্মান সরকার, জনগণ ও রাজনীতিবিদদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
মঙ্গলবার সকালে সফররত জার্মান পার্লামেন্টের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এ অনুরোধ জানান। জার্মান পার্লামেন্টের অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ডাগমার জি. ওহরল প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। বৈঠক শেষেপ্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল সাংবাদিকদের এ কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় বিভিন্ন খাতে আরো জার্মান বিনিয়োগের আহবান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে আমরা আরো জার্মান বিনিয়োগ চাই।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে এবং সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বিস্তারের মাধ্যমে দারিদ্রসীমা ৪০ থেকে ২৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতায় এসে তাঁর বিগত সরকারকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার পাশাপাশি সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সংগাম করতে হয়েছে। এরপরও তাঁর সরকার দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য দারিদ্র, ক্ষুধা ও নিরক্ষরতা মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। যেখানে থাকবে না জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদের অভিশাপ। সেই লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশ পূনঃগঠনে জার্মান সরকারের সহায়তার কথা উল্লেখ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর স্বামী প্রখ্যাত পরমানু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে জার্মানীতে অবস্থানের কথা স্মরণ করে বলেন, জার্মানীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক আবেগের।
জার্মান সংসদীয় প্রতিনিধিদলের নেতা বলেন, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্ব রয়েছে। তিনি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত করার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা পূরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জার্মাান সরকারের সহায়তার আশ্বাস দেন।
ডাগমার মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল(এমজিডি) অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করেন। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণের যে অগ্রগতি হয়েছে তিনি তারও ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, এ্যাম্বাসেডর-এট-লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবদুস সোবহান সিকদার, বাংলাদেশে জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. এ্যালবার্ট কনজে এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি মাহবুবুল হক শাকিল।