দ.সুনামগঞ্জে ৫৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত প্রাচীর ভেঙ্গে পড়েছে
খবর বাংলা২৪ ডেক্সঃ দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ৫৬ লক্ষ টাকা ব্যায়ে উপজেলা পরিষদের নব নির্মিত প্রাচীর ভেঙ্গে পড়েছে। উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় গত ১২-১৩ অর্থ বছরে উপজেলা পরিষদ ভবনের চার পাশে সীমানা প্রাচীর তৈরীর জন্য ২হাজার ৪শত ফুট লম্বা, ১১ফুট উচু, ১০/১০ইঞ্চি পিলার, ৫ইঞ্চি গাথুনি, ৩/৩ফুট বেইছ ও সাড়ে ১০ফুট পর পর পিলার দিয়ে ডিজাইন তৈরী করেন বর্তমান উপজেলা প্রকৌশলী আলা উদ্দিন খান, এবং ডিজাইনের প্রেক্ষিতে এলজিইডি থেকে ৫৬ লক্ষ টাকা ব্যায় নির্ধারণ করে টেন্ডারে মাধ্যমে সমির এন্টারপ্রাইজকে কাজ দেয়া হয়।
গত ১০ এপ্রিল রাতে স্বাভাবিক ভাবে ভবনের পূর্ব পাশের ১৬৮ ফুট প্রাচীর ভেঙ্গে যায়। রবিবার দিবাগত রাতে ঝড়ো হাওয়ায় প্রাচীরের ১৫৭.৫ ফুট প্রাচীর ভেঙ্গে যায় এবং ৫২.৫ ফুট প্রাচীর হেলে যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকজন মনে করছেন উপজেলা প্রকৌশলী আলা উদ্দিন খান অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে নিম্নমানের কাজ ও ডিজাইনে ত্রুটি থাকায় এ ঘটনা ঘঠেছে। তারা আরও জানান, ১১ফুট উচু প্রাচীর উপরে লিন্টার ও প্রাচীর ধরে রাখার জন্য টেশা পিলার না থাকায় এমনটি হয়েছে।
এ ব্যাপারে সমির এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী সমির দাস বলেন প্রাচীরের নিচের অংশে মাটি না থাকায় ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে প্রাচীর ভেঙ্গেছে। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আলা উদ্দিন খান এ প্রতিবেদককে বলেন প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে ও প্রাচীরের নিচের অংশে মাটি ভরাট না করায় প্রাচীর ভেঙ্গে গেছে। এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন প্রাচীরের ডিজাইনে ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজে এবং আমাদের পর্যবেক্ষণে কোন ত্রুটি নাই। পরিষদের দক্ষিণ পাশে সল্প ব্যায়ে নির্মিত টিন সেট ঘরটি গত রাতের ঝড়ো হাওয়ায় কোন ধরণের ক্ষতি হয়নি এমন প্রশ্নের সম্মূখিন হলে তিনি তা এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুর্শেদা জামান এ প্রতিবেদককে বলেন গত ১০ এপ্রিল সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে গেলে ১১এপ্রিল উপজেলা প্রকৌশলী আলা উদ্দিন খানকে (প্রাচীরের ডিজাইনে ত্রুটি, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের কাজ নাকি আপনার পর্যবেক্ষনে ত্রুটি) লিখিত ভাবে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রকৌশলী লিখিত ভাবে বলেন ডিজাইনে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও আমাদের পর্যবেক্ষনে কোন ত্রুটি নাই। তিনি লিখিত ভাবে বলেন প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও প্রাচীরের নিচের অংশে মাটি ভরাট না করায় এ ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুর্শেদা জামান আরও বলেন বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তিনি বলেন এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জকে একটি বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করে সঠিক কারণ উদঘাটন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম এ প্রতিবেদককে বলেন প্রাচীরের উচ্চতা বেশী হওয়ায় ও ডিজাইনে ত্রুটি থাকায় এবং প্রাচীরের নিচের অংশে মাটি না থাকার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন কাজ চলাকালীন অবস্থায় যেহেতু প্রাচীর ভেঙ্গেছে সেহেতু পুরো কাজের দায় ভার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের।