নরেন্দ্র মোদীকে চোর আখ্যা দিলেন মমতা
খবর বাংলা২৪ ডেক্সঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি কে, কত টাকায় কিনেছেন- নরেন্দ্র মোদীর এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছেন, ‘এক জন চোর কী বলল, তার উত্তর দিতে হবে? আমি জনগণের কথার উত্তর দেব। আর এ সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমার দলের পাঁচ হাজার নেতা রয়েছে!’
তিনি বলেন, ‘আমি নিজে কী, আমি জানি না? আমি এ প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নই! আমার কোনও শংসাপত্রের দরকার নেই!’ মমতার পাল্টা হুঁশিয়ারি, ‘আমিও অনেক কিছুই জানি। এখন বলব না। পরে বলব! হাঁড়ি খুলে দিলে একটা ভাতও আর হাঁড়িতে থাকবে না!’
এদিকে নরেন্দ্র মোদীর প্রশ্নকে ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ’ আখ্যা দিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীকে। মোদী ক্ষমা না-চাইলে তাঁর নামে মানহানির মামলা করারও হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, রোববার সন্ধ্যায় শ্রীরামপুরে নির্বাচনী সভায় মোদী বলেন, ‘প্রথমে মমতার ছবি বিক্রি হতো চার লাখে। পরে বেড়ে হয় ৮ ও ১৫ লাখ। শেষ পর্যন্ত মমতা এত ভাল ছবি আঁকতে আরম্ভ করলেন যে, ১ কোটি ৮০ লাখে তা বিক্রি হল! কে কিনল? মানুষের তা জানার অধিকার আছে।’
মোদীর জনসভার ১২ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন তৃণমূল নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় এবং মুখ্য জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাঁরা দাবি করেন, মোদী ভুল কথা বলছেন। মুকুল রায় বলেন, ‘১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকায় ছবি কেনার গল্প হচ্ছে। উনি (মোদী) যে অভিযোগ করছেন, তা প্রমাণ করুন! না হয় নিঃশর্ত ক্ষমা চান।’
এদিকে মোদী পশ্চিমবঙ্গে ভিন্ন ভাষাভাষী এবং ধর্মীয় সংগঠনের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে সংঘর্ষ বাধাতে চাইছেন বলে অভিযোগ করে নবান্ন চত্বরে মমতা বলেছেন, ‘বাঙালি-অবাঙালি ভাগ করে দিচ্ছে। এত বড় সাহস? এত বড় বুকের পাটা! কে তুই! কে ভাই! কোন হরিদাস?’
মোদীকে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘বাংলায় জাতপাতের রাজনীতি আনার চেষ্টা করবেন না! রাজনীতি করছেন করুন, কিন্তু এই ধরনের কথাবার্তা কেন? কোনও ইতিহাস জানে না!’
এর আগে শ্রীরামপুরের স্টেডিয়াম মাঠে রবিবার সন্ধ্যায় এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মোদী বলেছিলেন, ‘মমতাজি ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে এই রাজ্যে রাজনীতি শুরু করেছেন। বিহার, ওড়িশা থেকে এই রাজ্যে গরিব মানুষ কাজে এলে ওঁর রাগ হয়। তাঁদের পর মনে হয়। হেনস্থা হন তাঁরা। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে কেউ এলে উনি তাঁদের ‘আদর’ করে এই রাজ্যে রেখে দেন। ১৯৪৭ সালের পরে যাঁরা ভারতে এসেছেন, তাঁরা বিছানা-বেডিং বেঁধে রাখুন! ১৬ মে-র পরে তাঁদের বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে।’
মোদীর এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মমতা।
সূত্র: আনন্দবাজার