অপহরণ ঠেকাতে বিএনপির ১০ সতর্কবার্তা
খুন, গুম, অপহরণ প্রতিরোধ করতে জনসাধারণের প্রতি ১০ সতর্কবার্তা দিয়েছে বিএনপি। বিকেলে গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অপহরণ প্রতিরোধে এ সতর্কবার্তাগুলো জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার সাংগঠনিক সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা কার্যকর করার জন্য আমরা সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের প্রতিটি স্তরের ও শাখার নেতাকর্মীদর উদ্ধাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’
এ সময় তিনি ১০টি সতর্কবার্তা তুলে ধরেন-
১. বিএনপির জন্য আমাদের পরামর্শ হচ্ছে প্রত্যেকের আওতাধীন এলাকায় লিফলেট, পোস্টার, সভা, মতবিনিময়সহ বিভিন্ন পন্থায় অপহরণ, খুন, গুম হত্যা সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন এবং এসব অপরাধের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
২. চলাফেরায় সতর্ক থাকুন, একা চলাচল ও নির্জন ও অনিরাপদ স্থানগুলো এড়িয়ে চলুন।
৩. নেতাকর্মী সবাই মিলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখুন। যতদূর সম্ভব পারস্পারিক যোগাযোগ বজায় রেখে চলুন।
৪. প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্থানীয় ফোন নম্বর ও যোগাযোগের ঠিকানা সংগ্রহে রাখুন। কোএনা ঘটনা ঘটলে দ্রুত তাদের জানান এবং দলের নেতাকর্মীদের ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দিন।
৫. বিএনপির সদর দপ্তরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। প্রতিটি ঘটনা কেন্দ্রকে জানান।
৬. কোথাও অপহরণ পরিকল্পনার খবর পেলে যতোবেশি সম্ভব বেশি লোক মিলে দ্রুত সেখানে উপস্থিত হোন এবং মিলিতভাবে প্রতিরোধের চেষ্টা করুন।
৭. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে কাউকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে তাদের পরিচয় সম্পর্কে এবং আটক ব্যক্তিকে কোথায় নেয়া হচ্ছে এ সম্পর্কে নিশ্চিত হোন।
৮. আটক ব্যক্তিকে কোথায় নেয়া হচ্ছে সেখানে সবাই মিলে গিয়ে দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলুন এবং কী অভিযোগে, কোন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা জানার চেষ্টা করুন। কবে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে তাও জেনে নিন। পারলে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিন।
৯. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভুয়া পরিচয় দিলে তাদের প্রতিরোধ করুন এবং পুলিশে খবর দিয়ে তাদের হাতে তুলে দিন।
১০. আক্রান্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ান এবং তাদের বিবরণ সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরুন। গুম, অপহরণ ও খুনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থানীয় ভিত্তিতে গ্রহণ ও পালন করুন। অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন গড়ে তুলুন।
এদিকে গুম, অপহরণ ও খুনের দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে যখন এক ভয়ঙ্কর অবস্থা বিরাজ করছে তখনই সরকার আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক দাবি করে নাগরিকদের নিরাপত্তা ও আতঙ্ক নিয়ে চরম পরিহাস করে চলেছে। দায়িত্বশীল কেউ কেউ বিরোধী দলকে দায়ী করে চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়ও দিচ্ছেন।’ মানুষের জীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে এমন নিষ্ঠুর তামাশা ও রাজনৈতিক চাকরি না করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
এসময় তিনি নারায়ণগঞ্জের আইনজীবীরা রোববার যে হরতাল আহ্বান করেছে তাতে বিএনপির নৈতিক সমর্থন রয়েছে বলে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আরএ গনি, এমকে আনোয়ার, বেগম সারোয়ারী রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, বেগম সেলিমা রহমান, এম হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম-মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু এবং ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন উপস্থিত ছিলেন।