আবারো মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

আবারো মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
 সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলামের অপহরণের প্রতিবাদে আবারো বিক্ষোভ করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে এলাকাবাসী ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সানারপাড় এলাকা থেকে মৌচাক পর্যন্ত অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছোড়ে। পরে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ সানারপাড় এলাকার শত শত ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ওঠার চেষ্টা করে। পুলিশ এ সময় বাধা দেয়ার চেষ্টা করলেও এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে পুলিশের বাধা কোনো কাজে আসেনি। পরে বেলা পৌনে ১২টায় শত শত বিক্ষুদ্ধ জনতা ঢাকা-চট্রগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।

এতে ওই সড়কে সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার পরে দোকান বন্ধ করে বের হওয়ার পরে সানারপাড় বাসস্ট্যান্ড থেকে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী সাইফুল। পরে দোকানের ম্যানেজার আব্দুল হান্নানের কাছে ফোন করে সাইফুল ইসলামের মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়।

এর আগে গত ২৭ এপ্রিল রোববার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৫ জনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য নজরুলের সঙ্গে অপহৃত হয়েছিলেন- তার প্রাইভেটকারের চালক জাহাঙ্গীর, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সহসভাপতি তাজুল ইসলাম, ৭নং ওয়ার্ড যুবলীগকর্মী মনিরুজ্জামান স্বপন, লিটন ও তার গাড়ির ড্রাইভার।

জানা যায়, ওইদিন দুপুর আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলার হাজিরা শেষে সাদা রঙের এক্স করোলা (ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-৯১৩৬) দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ ফিরে যাওয়ার পথে শিবুমার্কেট এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই রাতে নজরুলের গাড়িটি গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে শালবনের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে তাদের কোনো সন্ধান মিলছিল না।

একইদিন আইনজীবী চন্দন সরকারসহ দুজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। চন্দন সরকারেরও গাড়ি পরে ঢাকার নিকেতন থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাদেরও হদিস বুধবার পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছিল না। আর এ দুটি অপহরণের ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে নারায়ণগঞ্জ।

পরে বুধবার বিকেলে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া শান্তিনগর এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অপহৃত ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

প্যানেল মেয়রসহ সাতজন অপহরণের ঘটনায় গত ৫দিন ধরেই ঢাকা-চট্রগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে আসছিল বিক্ষুদ্ধ জনতা। এরমধ্যেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা সহ-সভাপতি ও ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসনের কার্যালয় ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়ার মালিকানাধীন পেট্রোল পাম্পে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুদ্ধরা। তারা দুইজন অপহরণ মামলার এক ও দুই নম্বর আসামি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জাকারিয়া সাংবাদিকদের জানান, অপহৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজের জিডি করা হয়েছিল। পরে তার পরিবার বলছে তাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে সর্বোচ্চ সক্ষমতা চালানো হচ্ছে। অপহৃতকে উদ্ধারে চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend