সুন্দরবন থেকে অপহূত জেলের লাশ উদ্ধার, এখনো নিখোঁজ একজন
সুন্দরবনের ভদ্রা এলাকা থেকে গত মঙ্গলবার অপহূত হওয়া জেলে লুইস ইজারদার ওরফে নিশির গুলিবিদ্ধ লাশ আজ শুক্রবার দুপুরে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ আছেন এমরান নামের আরেক জেলে।
স্থানীয় জেলে ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মংলার চিলা এলাকার জেলে লুইস ইজারদার ও তাঁর সহযোগী সুব্রত মিস্ত্রি গত মঙ্গলবার পূর্ব সুন্দরবনে বন বিভাগের পাশ নিয়ে ভদ্রা খালে মাছ ধরতে যান। ওই দিন বেলা দুইটার দিকে ওই খালে মাছ ধরার সময় বনদস্যু ধলু বাহিনী ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়ে নৌকা থেকে নিশিকে তুলে নিয়ে যায়। আর সুব্রতকে টাকা নিয়ে নিশিকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য বলে দস্যুরা।
নিশির সঙ্গী জেলে সুব্রত জানান, দস্যুরা নিশিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরপরই বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ভদ্রা এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় বনের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। গুলিতে ধলু বাহিনীর প্রধান ধলু ও বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড বাচ্চু নিহত হয়। আটক হয় আরও ছয় জলদস্যু। এ ঘটনার পর থেকে নিশির কোনো খোঁজ না পাওয়ায় সুব্রত ও নিশির পরিবারের লোকজন বনের বিভিন্ন স্থানে নিশিকে খুঁজতে থাকে। আজ দুুুপুরে ভদ্রা খালসংলগ্ন চাউলোবগির উত্তর পাশের একটি গাছের ডালে বেধে থাকা মাথায় গুলিবিদ্ধ নিশির লাশ উদ্ধার করে জেলেরা। পরে মরদেহ চিলায় নিয়ে আসলে তার পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়ে।
নিহত নিশির স্ত্রী ও চার মেয়ে আছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, নিহত নিশি কোনো দস্যু বাহিনীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
চিলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোল্লা তরিকুল ইসলাম বলেন, নিশি দীর্ঘদিন ধরে বন বিভাগের বৈধ অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। নৌকায় বন বিভাগ থেকে ইস্যুকৃত তাঁর নামের পাসও পাওয়া গেছে।
তবে র্যাব ও বনদস্যুর বন্দুকযুদ্ধের মধ্যে পড়ে, নাকি ডাকাতের গুলিতে অপহূত নিশির মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি সহযোগী জেলে, এলাকাবাসী ও পুলিশ। এদিকে দস্যু বাহিনীর হাতে গত সোমবার একই জায়গা থেকে অপহূত মংলার কানাইনগর এলাকার জেলে এমরান এখনো নিখোঁজ আছে বলে জানান জেলেরা।
মংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, নিহত ব্যক্তির পরিবার ধারণা করছে, অপহরণের পর দস্যুদের গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শনিবার সকালে বাগেরহাট মর্গে পাঠানো হবে।