রাউজানে গৃহবধূ অপহরণ করে পালাক্রমে ধর্ষণ : পিতা-পুত্র গ্রেফতার
খবর বাংলা ২৪ডেক্স: চট্টগ্রামের রাউজানে গৃহবধূকে অপহরণ করে পালাক্রমে ধর্ষণ করার অভিযোগে পিতা পুত্রসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার জানালীহাটে স্ট্যাশনের আস্তানা থেকে এলাকাবাসির সহযোগীতায় তাদের গ্রেপ্তার করে রাউজান থানা পুলিশ।
জানা যায়, উপজেলার জানালী হাটের পার্শ্বে মুকুল ডাক্তারের বাড়ীতে বাসা ভাড়া নিয়ে ভন্ড বৈদ্য সুজন বড়ুয়া (ধনা বৈদ্য) অস্তানা গড়ে তোলে। সে নিজেকে বৈদ্য পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রচারণা চালায়। এ আস্তানায় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা, জীন, ভুত, পেত্নীর কবল থেকে মানুষকে বাঁচানোর নাম করে বসানো হয় বৈদ্যর আসর। সুজন বড়ুয়া ধনা হাতিয়ে নেয় অসহায় মানুষের লাখ লাখ টাকা।
স্থানীয় লোকজন জানায়, ভন্ড বৈদ্য সুজন চিকিৎসা নিতে আসা সুন্দরী মহিলাদেরকে সুস্থ করার কথার প্রলোভনে পঠিয়ে দেহ ভোগ করতো। রাউজান পৌর এলাকার পূর্ব গহিরার চিকিৎসা নিতে আসা সিএনজি অটোরিক্সা চালক আলমগীর বলেন তাকে ঝাড়ফুক জীনের আছর ও বান টোনা কাটার নাম করে বিভিন্ন দপে দপে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয় ভন্ড বৈদ্য সুজন বড়ুয়া। চিকিৎসার সুযোগে ভন্ড সুজনের চোখ পড়ে সিএনজি চালক আলমগীরের সুন্দরী স্ত্রী রুমানা আকতারের দিকে। রুমানা আকতারকে বিভিন্ন সময়ে কাছে নিয়ে ঝাড়ফুক তাবিজ দিতেন বলে জানান তিনি।
এক সন্তানের জননী রুমানা আকতার জানান, গত ২৯ মার্চ ভন্ড বৈদ্য সুজন রুমানাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে সিএনজি অটোরিক্সাতে উঠিয়ে তার মুখে রুমাল দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। অজ্ঞান অবস্থায় রুমানাকে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি এলাকায় নিয়ে আটক রেখে সুজন রুমানাকে পালাক্রমে ধর্ষন করে। পরে রুমানাকে মানিকছড়ি থেকে গোপনে চট্টগ্রামের চান্দঁগাও এলাকায় নিয়ে গিয়ে একটি বাসায় আটক রেখেও দির্ঘদিন ভন্ড বৈদ্য সুজন ধর্ষন করে বলেও জানান গৃহবধু রুমানা। এখানে আটক রাখা অবস্থায় রুমানার স্বামী আলমগীরকে ফোন করে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে করে ভন্ড বৈদ্য সুজন। মুক্তিপণের টাকা না দিলে এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ী করলে রুমানার চার বৎসরের কন্যা সন্তান আলোকে হত্যা করা হবে হুমকি প্রদান করে।
এদিকে স্ত্রী রুমানা ও কন্যা সন্তান আলোকে হারিয়ে সিএনজি চালক আলমগীর হতবাক হয়ে পড়েন। বিষয়টি সিএনজি চালক আলমগীর স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম চৌধুরীসহ এলাকার লোকজনকে জানালে এলাকার লোকজন ভন্ড বৈদ্য সুজন বড়ুয়ার ছেলে রিপন বড়ুয়াকে চাপ প্রয়োগ করলে গৃহবধু রুমানা আকতার ও তার কন্যা সন্তানকে এনে দেয় রিপন বড়ুয়া।
ফিরে এসে রুমানা আকতার ভন্ড সুজন বড়ূয়া ধনা বৈদ্যের নির্মম নির্যাতনের কথা বললে এলাকার মানুষ বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেন। গত বৃহস্পতিবার ভন্ড সুজন বড়ুয়া প্রকাশ ধনা বৈদ্য (৫০) বিরুদ্ধে নির্যাতনের শিকার গৃহবধু রুমানা আকতার বাদী হয়ে অপহরণ করার পর আটক রেখে ধর্ষনের ঘটনার ব্যাপারে রাউজান থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ভন্ড সুজন বড়ুয়া প্রকাশ ধনা বৈদ্যকে সহায়তা করার অভিযোগ করে ভন্ড সুজন বড়ুয়া প্রকাশ ধনা বৈদ্য (৫০) এর ছেলে রিপন বড়ুয়া (২০) একই মামলায় আসামী করা হয়। রাউজান থানা পুলিশ রুমানা আকতারের মামলা পেয়ে এলাকার লোকজনের সহায়তায় ভন্ড সুজন বড়ুয়া প্রকাশ ধনা বৈদ্য (৫০) ও তার ছেলে রিপন বড়ুয়া (২০) কে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করেন। ভন্ড সুজন ফটিকছড়ি উপজেলার বৃন্দাবন এলাকার মৃত দেবেন্দ্র লাল বড়ুয়ার পুত্র । গত চার বৎসর ধরে ভন্ড সুজন বড়ুয়া প্রকাশ ধনা বৈদ্য রাউজান পৌর এলাকার জানালী হাটের পার্শ্বে মুকুল ডাক্তারের বাড়ীতে ভাড়া বাসা নিয়ে বৈদ্য সেজে এলাকার লোকজন থেকে চিকিৎসা জীন, ভূত পেত্নীর আছর থেকে রক্ষা করার নামে এলাকার লোকজনের সাথে ভন্ডামী, প্রতারণা ও হাজিরাতে চিকিৎসা করার নামে তার কাছে যুবতী মহিলাদের সাথে অনৈতিক কাজ করতো বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন।
শুক্রবার বিকালে রাউজান থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশঁ বলেন, গৃহবধু রুমানা আকতারের মামলা রের্কড করা হয়েছে। মামলার আসামী ভন্ড প্রতারক সুজন বড়ুয়া ও তার ছেলে রিপন বড়ুয়াকে এলাকার লোকজনের সহায়তায় গ্রেফতার করার পর আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।