শেরপুর আ’লীগের সম্মেলন হয়নি ১০ বছরেও : দল ক্ষমতায় যাওয়ার পর সবার মনোযোগ ক্ষমতার দিকে

al__flag_700খবর বাংলা ডেক্স শেরপুর জেলা ও সদরসহ ৫টি উপজেলার মধ্যে ৪টির সম্মেলন ১০ বছরেও অনুষ্ঠিত হয়নি। অন্যদিকে ১৯৯৬ সালে নকলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দল ক্ষমতায় যাওয়ার পর সবার মনোযোগ ক্ষমতার দিকে। দলের সংসদ সদস্যরা ক্ষমতার চর্চা করতেই বেশি ব্যস্ত থাকেন। জেলা সদরের বিশেষ কিছু এলাকাকে প্রাধান্য দিয়ে কয়েকজন নেতাকে ঘিরেই সবকিছু চলছে।
সদরে দলে তেমন সঙ্কট না থাকলেও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর নির্বাচনী এলাকা শেরপুর-২ (নকলা_নালিতাবাড়ী) আসনের অবস্থা একেবারে নাজুক। এখানে দেড় যুগ বা ১৮ বছর আগে উপজেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিগত ১০ বছরে নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ এক-তৃতীয়াংশ নেতা মারা গেলেও সম্মেলনের নাম নেই। মতিয়া চৌধুরীর নাম ভাঙিয়ে বেশকিছু নেতা অর্থ-বৃত্তে বলিয়ান হলেও দলের ১২টা বাজিয়েছে। গত পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মেয়রের পদ হারায়। দলের শৃঙ্খলা না থাকার কারণে তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী থাকায় সেবার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়ী হন। চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের সিডিউল এখনো ঘোষণা হয়নি। তবে যে সময়ই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হোক না কেন আবারো বিশৃঙ্খলভাবে একাধিক প্রার্থী থাকার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এখানে রাজনীতি আবর্তিত হয় ক্ষমতা ও মতিয়াকে ঘিরে। সুবিধা ভোগীদের বেপরোয়া কর্মকা-ে নকলা উপজেলার পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা চুপ।
গ্রুপিংয়ের কারণে নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ অনেকটা কোমায় চলে যাওয়ার মতো অবস্থা। গ্রুপিংয়ের কারণে সর্বশেষ নালিতাবাড়ী উপজেলা এবং এর আগে পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে তৃণমূলের ভোটে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোকছেদুর রহমান লেবু দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত হলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম উকিল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী হলেও স্থানীয় ও জেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এলাকার নেতাকর্মীরা মনে করেন, তার পাশে দলীয় কোনো প্রভাবশালীর ছত্রছায়া থাকার কারণেই কেউ টু শব্দটি করতে পারেনি। ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-৩ আসনে দলীয় প্রার্থী বেগম মতিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অন্য বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বাদশা কেন্দ্র দখলের অভিযোগে দুপুরেই নির্বাচন বর্জন করেন। মতিয়া চৌধুরী নির্বাচিত হলেও এ নির্বাচন নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। দীর্ঘদিন থেকে এ আসনের উলি্লখিত দুই উপজেলায়ই মন্ত্রীর আস্থাভাজনরাই দলীয় সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছে।
শেরপুর-৩ (শ্রীবর্দী-ঝিনাইগাতী) আসনের আওয়ামী লীগের রাজনীতি, স্থানীয় এমপির বিশ্বস্ত আটজনের মাধ্যমে চলে। এমপির বিশ্বস্ত নেতারা দুই উপজেলায় ৮ খলিফা হিসেবে প্রসিদ্ধ। বিভিন্ন প্রকল্প, নিয়োগ, টিআর কাবিখাসহ সবকিছুই এমপি মনোনীত ৮ খলিফাই শেষ কথা। এখানে দল চলে এমপির কথায়। কেউ বাড়াবাড়ি করলে রাজনীতি ও সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হওয়ার ভয়েই কেউ কিছু বলেন না। পরীক্ষিত অনেক নেতা রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। এখানেও দলীয় গ্রুপিং চরম পর্যায়ে। দুই উপজেলায় শ্রমিক লীগের নামকাওয়াস্তে কমিটি থাকলেও কোনো অঙ্গ সংগঠন নেই। এখানে দলের কোনো কর্মসূচি পালিত হয় না। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল সম্মেলনের দীর্ঘ সূত্রতার কথা স্বীকার করে অন্যান্য অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend