অবশেষে জানা গেলো দীর্ঘ আয়ু লাভের গোপন রহস্য!
খবর বাংলা২৪ ডেক্স: বিজ্ঞানীদের দাবী তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন দীর্ঘায়ু হওয়ার গোপন রহস্য। ১১৫ বছরে বৃদ্ধা হেনড্রিকজ ভন অ্যান্ডেল স্কিপারকে কেন্দ্র করে কিছু গবেষণা থেকেই নাকি এই ফলাফল বের হয়ে এসেছে। তবে সবচাইতে অদ্ভুত ব্যাপারটা হলো ২০০৫ সালে মারা গিয়েছেন এই বৃদ্ধা!
১১৫ বছর বয়সী এই নারীর দীর্ঘ আয়ুর রহস্য খোঁজার জন্য তাঁর শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবং সেই রক্ত নিয়ে গবেষণা করেই তাঁরা উদ্ধার করেছেন দীর্ঘ আয়ুর গোপন সূত্র। গবেষণায় দেখা গেছে আমাদের কোষের বৃদ্ধির ক্ষমতার উপর নির্ভর করছে জীবনের আয়ু!
গবেষণার জন্য হেনড্রিকজ ভন অ্যান্ডেল স্কিপারকে বেছে নেয়ার কারণ শুধুমাত্র তাঁর বয়স নয়, বরং তাঁর ভালো স্বাস্থ্য। ১৮৯০ সালে জন্মগ্রহন করা এই নারী মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ছিলেন চমৎকার স্বাস্থ্যের অধিকারী এবং একই সাথে নীরোগও বটে। ফলে বিজ্ঞানীদের অনুরোধে ও পরিবারের সহায়তায় মৃত্যুর পূর্বে তিনি তাঁর শরীর দান করে যান বিজ্ঞানের গবেষণায়।
ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে বলা যাক। আমরা জন্মাই প্রায় বিশ হাজার হেমাটোপোয়েটিক স্টেম সেল নিয়ে, যা আমাদের বোন ম্যারোতে থাকে। সেখান থেকে সৃষ্টি হয় রক্তকণিকা গুলো। সময়ের সাথে মোটামুটি ১৩০০ সেল কর্মক্ষম থাকে রক্ত তৈরির জন্য। তবে কালে কালে তাদের ক্ষমতা হ্রাস পায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সক্রিয় স্টেম সেলগুলো প্রতিনিয়ত ক্ষয় হয় এবং মারা যায়। এবং একসময় কোষগুলি অকেজো হয়ে পড়ে। অন্যদিকে উৎপন্ন শ্বেত রক্ত কনিকার ক্রোমোজমও খুব ছোটো হয়ে আসতে থাকে।
বৃদ্ধা ভদ্রমহিলার রক্ত নিয়ে গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে মৃত্যুর কিছু বছর পূর্বে তাঁর দেহে মাত্র দুটি স্টেম সেল সক্রিয় ছিল। বেশিরভাগ শ্বেত কণিকা সেই দুটি সেল হতেই উৎপন্ন হয়েছিল। এই গবেষণা থেকে জিনম রিসার্চ (Genome Research) জানিয়েছে, মানুষের আয়ু নির্ভর করছে কতবার স্টেম কোষ ভাগ হচ্ছে বা কত দ্রুত তাঁরা মারা যাচ্ছে তার উপর। আন্দাজ করা হচ্ছে যে এই ভদ্রমহিলার ক্ষেত্রে স্টেম কোষ মারা যাবার হার অন্যদের তুলনায় কম ছিল বলেই তিনি দীর্ঘায়ু হয়েছেন।
গবেষক হেন হলস্টেজ মনে করেন, স্টেম সেল হল অমরত্বের চাবিকাটি। তিনি জানিয়েছেন, মানুষ জন্মাবার পর থেকেই যদি স্টেম কোষগুলিকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায়, তাহলে আমরা বেশিদিন বাঁচতে পারি।