সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নয়া বেতন কাঠামো : নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে বাজেটে ৭ হাজার কোটি টাকা
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য আগামী অর্থবছরে অর্থ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এই অর্থের পরিমাণ সাত হাজার কোটি টাকা হতে পারে। তবে পুরো অর্থবছরের জন্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা বাবদ মোট বরাদ্দ থাকছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতনভাতা খাতে বরাদ্দ রয়েছে ২৩ হাজার কোটি টাকা। আগামী ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এই বরাদ্দ বাড়িয়ে ৩০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা করার প্রাক্কলন করা হয়েছে। এই অর্থের মধ্য থেকে সাত হাজার কোটি টাকা আলাদা করে রাখা হবে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য। তবে অর্থবছরের শুরু থেকে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করা যাবে না। কারণ সরকার গঠিত পে অ্যান্ড সার্ভিস কমিশন তাদের রিপোর্টটি আগামী মাসে জমা দেয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যে এর মেয়াদ বৃদ্ধি করে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের সুপারিশ যদি পাওয়া যায় তবে পে-কমিশনের আংশিক বাস্তবায়নের কাজ আগামী জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর করা হতে পারে। এ জন্যই বাজেটে বেতনভাতা খাতে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।
পে-কমিশনের চেয়ারম্যান ড. ফরাস উদ্দীন গত মাসে বলেছিলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যে কর্মপ্রতিভা ও কর্মক্ষমতা আছে এটা আমরা বের করে আনতে চাই। তিনি উল্লেখ করেন, বেতনভাতা বাড়ানো হলে বাজারে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। এটা যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করব। বেশ কিছু সুবিধাদি টাকায় না দিয়ে অন্যভাবে দেয়া যায় কি না সে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
উদাহরণ হিসেবে ফরাস উদ্দীন বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য শিক্ষাভাতা দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। শিক্ষাভাতা নগদ অর্থে না দিয়ে স্কুল-কলেজের বেতন ও বই-খাতা কিনে দেয়া যায় কি না তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনাজনিত বীমা ও স্বাস্থ্যবীমা চালু করা যায় কি না তা চিন্তাভাবনা করছি। তবে এসব প্রস্তাব এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। আমরা এ সংক্রান্ত প্রশ্নমালা ওয়েবসাইটে দিয়ে দিয়েছি। যে কেউ এটা দেখতে পারে বলে জানান তিনি।
কমিশনের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ফরাস উদ্দীন বলেন, আগামী বাজেটের আগে কমিশন কোনো রিপোর্ট দিতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে সংসদে বলেছেন, আগামী অর্থবছরে পে-কমিশন একটা রিপোর্ট দেবে। তখন হয়তো বেতন বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতার বৈষম্য দূরীকরণের জন্য গত ২৪ নভেম্বর অর্থমন্ত্রণালয় থেকে পে-কমিশন গঠন করা হয়। কমিশনের মোট সদস্য হচ্ছে ১৫ জন। এর মধ্যে স্থায়ী সদস্য তিনজন। ১২ জন হচ্ছেন খণ্ডকালীন। এর আগে গত বছরের অক্টোবর থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ২০ শতাংশ মহার্ঘ্যভাতা দেয়া হচ্ছে।