বিশ্ব অ্যাজমা দিবস পালিত : ৫০ শতাংশ শিশুর অ্যাজমা হয় ১০ বছরের আগে
অ্যাজমা বা হাঁপানি আক্রান্ত শিশুদের ৫০ শতাংশই আক্রান্ত হয় জীবনের দশ বছর অতিক্রম করার আগেই। এ ছাড়া অন্য বয়সীদের জীবনের যেকোনো বয়সে অ্যাজমা হতে পারে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যার মোট ৭ শতাংশ অর্থাৎ এক কোটি ১২ লাখের মতো মানুষ অ্যাজমায় আক্রান্ত। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অ্যাজমা হলে এটা আর সারানো যায় না। তবে ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
গত ৩ মে ডেইলি মেইলে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গবেষকেরা দাবি করেছেন মাতৃদুগ্ধ পানকারী শিশুদের মধ্যে অ্যাজমা আক্রান্তের হার কম। তারা বলছেন, মাতৃদুগ্ধ শিশুদের অ্যাজমা প্রতিরোধ করতে পারে। গবেষকেরা গত ৩০ বছরে দুই লাখ ৫০ হাজার শিশুর মধ্যে গবেষণা করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তারা বলছেন, তিন বছরের নিচের বয়সী শিশু ৩৭ শতাংশ অ্যাজমার ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকে মাতৃদুগ্ধ পান করলে। যেসব শিশু বুকের দুধ পান করেনি তাদের সবাই শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। বাংলাদেশ লাং ফাউন্ডেশনের যুগ্ম মহাসচিব রেসপিরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: মো: আব্দুস শাকুর খান জানিয়েছেন, বাংলাদেশে শহরাঞ্চলের মানুষ অপেক্ষাকৃত বেশি অ্যাজমায় আক্রান্ত। এর সাথে তারা অ্যালার্জিজনিত নানা সমস্যায়ও ভুগছেন। এর বাইরে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষও শহরাঞ্চলের মতো অ্যাজমায় আক্রান্ত। কারণ উপকূলের মানুষ ছোট ছোট ঘরে গাদাগাদি করে বাস করেন। একই সাথে তারা কাঠের ও বাঁশের ব্যবহার বেশি করেন। কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তারা রান্নাবান্না করে থাকেন। এর ফলে তারা বেশি করে অ্যাজমায় আক্রান্ত হচ্ছেন। শহরাঞ্চলে ধুলাবালি, শিল্প-কারখানার কারণে এখানে অ্যাজমার হার বেশি।
ব্রিটেনের ডেইলি মেইলের গতকাল (৬ মে) সংখ্যায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতি বছর ৪০০ অ্যাজমা আক্রান্ত মানুষ মারা যায় চিকিৎসকের ভুল প্রেসক্রিপশনে। এ ছাড়া আরো ৪০০ অ্যাজমা আক্রান্ত মারা যান চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করা অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ সঠিকভাবে পালন না করায়। এসংক্রান্ত সমীায় সবচেয়ে বড় গবেষণা করেছে ব্রিটেনের রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স। ২০১২-২০১৩ সালে ব্রিটেনের ১৯৫ অ্যাজমা রোগীর মৃত্যু খুব গভীরভাবে পর্যবেণ করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন গবেষকেরা। তাদের মধ্যে শিশু ছিল ২৮ জন। তারা দেখেন যে, ৪৭ শতাংশ রোগীর প্রেসক্রিপশনে কোনো না কোনো ভুল ছিল। আর ১০ শতাংশ রোগীর েেত্র দেখা গেছে, তারা মৃত্যুর মাত্র এক মাস আগে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। একই সাথে তাদের সঠিক চিকিৎসা দিয়ে ডিসচার্জ করা হলেও পরে ঠিকমতো দেখাশোনা করা হয়নি।
গতকাল ছিল বিশ্ব অ্যাজমা দিবস। প্রতি বছর মে মাসের প্রথম মঙ্গলবার দিবসটি পালন করা হয়। এ বছরও সরকারি-বেসরকারিভাবে দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরে যথাযথভাবে পালিত হয়।