শ্রীলংকার এক গ্রামে মাছ-বৃষ্টি!
আন্তর্জাতিক ||
গ্রামবাসীরা পথের ধারে, মাঠে মাছ কুড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আকাশ থেকে ঝড়ে পড়া ছোট ছোট মাছের অনেকগুলোই তখনও তাজা। কুড়ানো মাছভর্তি পাত্রে জল ঢেলে দিতেই লাফিয়ে উঠল মাছ। রূপকথার গল্পের মতো মনে হলেও এমনটাই ঘটেছে শ্রীলংকার চিলাও জেলার একটি গ্রামে। অস্বাভাবিক এই মাছ-বৃষ্টিতে দারুণ আনন্দিত গ্রামবাসীরা এ নিয়ে রীতিমত উত্সবে মেতে ওঠে গত সোমবার। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
গ্রামবাসী জানিয়েছেন, ঘরের চালে আকাশ থেকে ভারী কিছু পড়ার শব্দে তারা বাইরে ছুটে আসেন। খোলা মাঠে, বাড়ির আশপাশে, রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে মাছ পড়ে থাকতে দেখেন তারা। ওই গ্রামের বাসিন্দারা সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ কিলোগ্রামের মতো মাছ কুড়িয়েছেন বলে জানান। খাওয়ার উপযোগী এই মাছ-বৃষ্টিতে আনন্দ-ভোজ শুরু হয়ে যায় গ্রামটিতে। তিন থেকে পাঁচ ইঞ্চি লম্বা এই মাছগুলো শ্রীলংকায় পরিচিত।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘মাছ-বৃষ্টি’ অস্বাভাবিক হলেও প্রকৃতিতে এটা ঘটে থাকে। মাছ সমৃদ্ধ কোনো কম গভীরতার জলাশয়ের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের ঘূর্ণিবায়ুর কেন্দ্র বয়ে গেলে এমন জলঘূর্ণি ঘটতে পারে। এসময় পানিতে থাকা মাছ, ব্যাঙসহ সবকিছুই ঘূর্ণিবায়ুর সঙ্গে আকাশে উঠে যায়। আকাশে উঠে যাওয়ার পর ঝড়ের সঙ্গে অনেকদূরে চলে যেতে পারে এইসব জলজ প্রাণীও। এমনকি এই জলঘূর্ণি থেমে যাওয়ার পরও মেঘের স্তরের কারণে এরা সাময়িকভাবে আটকে থাকতে পারে ওপরেই। আর ঝড়, জলঘূর্ণি থেমে গেলে মেঘের ভেতর থেকে ঝড়ে পড়তে শুরু করে জলজপ্রাণীগুলো। সাধারণত মাছ-বৃষ্টি এমনই হয়।
শ্রীলংকায় এই মাছ-বৃষ্টি অবশ্য এবারই প্রথম নয়। ২০১২ সালে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ‘চিংড়ি-বৃষ্টি’ হওয়ার কথা জানা গিয়েছিল। একই বছর শ্রীলংকায় লাল ও হলুদ রঙের শিলাখণ্ডের অস্বাভাবিক শিলাবৃষ্টি হয় শ্রীলংকায়। ওই শিলাগুলি মহাকাশ থেকে পতিত বলে ধারণা করেন বিজ্ঞানীরা। জলবায়ুর এই বিশেষ পরিবর্তন এবং শ্রীলংকায় এই মাছ-বৃষ্টি ও মহাকাশের শিলাবৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করছেন মার্কিন ও ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা।
