সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জামায়াতের এক নেতা নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে উপজেলার ভদ্রখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের পরিবার ও জামায়াতের দাবি, ‘বন্দুকযুদ্ধ’ নয়, পুলিশ ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। নিহত ব্যক্তির নাম আশরাফুল ইসলাম (৩৫)। বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার ঠেকরা গ্রামে। বাবা আদম আলী। আশরাফুল জামায়াতের রুকন ও কালীগঞ্জ উপজেলা সাতপুর দাখিল মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। পুলিশের দাবি, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন উপপরিদর্শক (এসআই) ও চারজন কনস্টেবল সামান্য আহত হয়েছেন।কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রহমানের ভাষ্য, তাঁরা গতকাল দিবাগত রাতে জানতে পারেন, উপজেলার ভদ্রখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে একদল দুর্বৃত্ত নাশকতার লক্ষ্যে গোপন সভা করছে। এর ভিত্তিতে তাঁর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাত একটার দিকে ওই এলাকায় যায়। এ সময় ওই বিদ্যালয়ের মাঠের পশ্চিম পাশ থেকে দুর্বৃত্তরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পাল্টাপাল্টি গুলিবিনিয়মের একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিত্সক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত ব্যক্তির নাম আশরাফুল ইসলাম। তিনি জামায়াতের নেতা।
কালীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির মো. মোসলেম উদ্দিনের দাবি, আশরাফুল জামায়াতের রুকন। গতকাল দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঠেকরা গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ভদ্রখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। নিহতের স্ত্রী পাপিয়া খাতুনও একই দাবি করেন।
কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিত্সা কর্মকর্তা মফিজুল রহমানের ভাষ্য, রাত পৌনে দুইটার দিকে আশরাফুলকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। তাঁর বুক গুলিবিদ্ধ ছিল।
ওসি গোলাম রহমানের ভাষ্য, নিহত আশরাফুলের বিরুদ্ধে নাশকতা সৃষ্টি ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দুটি মামলা ছিল।
‘বন্দুকযুদ্ধে’ কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মহসিন আলী তরফদার, কনস্টেবল মো. কামালউদ্দিন, শরীফুল ইসলাম, আবদুল জব্বার ও আহাদ আলী সামান্য আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের সময় পুলিশ ১৯টি গুলি ছুড়েছে।