খুনের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ৩ র্যাব কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত
গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর প্রধানকে তার কার্যালয়ে ডেকে এনে র্যাব-১১’র সিইও লে. কর্ণেল তারেক সাইদসহ তিন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে কর্যালয় সূত্রে জানা গেছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ খুনের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনীর এ তিন কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা নির্দেশ দেন। অপর দুই কর্মকর্তা হলেন, মেজর আরিফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এম এম রানা। তিন কর্মকর্তার মধ্যে সেনাবাহিনীর দুজনকে অনির্দিষ্টকালীন এবং নৌবাহিনীর একজনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার রাতেই গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনায় সরকার বিব্রত। সরকার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। নারায়ণগঞ্জে অপহরণ ও খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ক্ষমা করা হবে না। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকার গঠন করে যখন দেশ পরিচালনায় মনোযোগী হয়েছি তখন একটি মহল বাধাগ্রস্ত করতে তৎপর হয়ে উঠেছে। এ অপতৎপরতার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
জানা যায়, ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে নজরুল ইসলাম, চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে এমন অভিযোগ ওঠে। লে. কর্নেল তারেক সাঈদসহ কয়েকজন র্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম। গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। এর আগে নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও র্যাব-১১-এর সিওসহ তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৭ জনকে খুনের ঘটনায় র্যাব-১১-এর কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর সোমবার র্যাব সদর দফতর চার সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটির প্রধান হলেন, র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. আফতাব উদ্দিন আহমেদ। সেনাবাহিনী থেকে অভিযুক্ত দুই সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও র্যাবের তদন্ত কমিটি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করবে।
প্রসঙ্গত সাতজনকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগের আগে র্যাব-১১ কমান্ডিং অফিসার ও সেনাবাহিনীর দুই কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।