অপহরণের ২ বছর পর কামালের কঙ্কাল উদ্ধার, গ্রেফতার ৫
ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে অপহরণের দুই বছর পর ভোলার লালমোহনের নির্মাণ শ্রমিক কামাল হোসেনের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় পাঁচজনকে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মৃতের স্ত্রীকে আটক করা হয়।
মঙ্গল ও বুধবার অভিযান চালিয়ে ভোলার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) একটি দল কামাল হোসেনের কঙ্কাল উদ্ধার ও পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সাহাবুদ্দিন, জাহাঙ্গীর, নুরে আলম, অজিউল্ল্যাহ ও আব্বাসকে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক মৃতের স্ত্রী নুর জাহান।
গ্রেফতারকৃতরা পরকীয়া প্রেমের কারণে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। এ ঘটনায় জেলাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ ও আসামি সূত্র জানায়, ভোলার লালমোহনের রমাগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আব্দুল গনির ছেলে কামাল হোসেন তার স্ত্রী নুর জাহানকে নিয়ে ঢাকার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সেখানে তিনি নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন।
কামালের বাসায় গ্রামের বাড়ির পূর্ব পরিচিত নুরে আলম যাওয়া-আসার মধ্য দিয়ে তার স্ত্রী নুরজাহানের সঙ্গে পরকীয়া হয়। বিষয়টি কামাল জেনে গেলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
২০১২ সালের ৫ মে কামাল হোসেনকে কাজের কথা বলে সাহাবুদ্দিন, জাহাঙ্গীর, নুরে আলম, অজিউল্ল্যাহ ও আব্বাস তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে নারায়ণগঞ্জের নয়ামাটি এলাকায় লাঠি ও ইট দিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখে।
ওই ঘটনার পরপরই স্ত্রী নুরজাহান ভোলার আদালতে অপহরণ ও গুমের কথা উল্লেখ করে মামলা করেন। পরে মামলাটির তদন্তের ভার পায় ডিবি পুলিশ।
মঙ্গলবার গোপন সংবাদ পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপারের মাহাফুজুর রহমানের নেতৃত্বে ডিবির একটি দল অভিযান চালিয়ে কঙ্কালসহ সাহাবুদ্দিন নামে একজনকে গ্রেফতার করে। পরে তার স্বীকারোক্তিতে বুধবার পর্যন্ত আরো চার আসামিতে গ্রেফতার করা হয়।
এদের মধ্যে সাহাবুদ্দিন ছাড়া বাকিরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃত্ততার কথা অস্বীকার করেছেন পুলিশের কাছে।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, নুরে আলমের সঙ্গে কামালের স্ত্রী নুরজাহানের পরকীয়া ছিল। কামাল বিষয়টি টের পেয়ে গেলে বাকিরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। আমি বাধা দিলে আমাকেই উল্টা হত্যার চেষ্টা করে। তাই বাধ্য হয়েই আমি হত্যাকাণ্ডে সহায়তা করি।
তবে মৃতের স্ত্রী নুরজাহান পরকীয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি কাউকে চিনি না। কারো সঙ্গে আমার পরকীয়া নেই। এরা মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।
ভোলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, কি কারণে এ হত্যাকাণ্ড তা উদঘাটনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করবে পুলিশ। মৃতের কঙ্কাল ডিএনও পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এসপি আরো জানান, হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। খুব শিগগিরই এটি উদঘাটন হবে।