সাবধান! ‘ভয়ংকর সুন্দরী’
গোলাপখাস নামের এ আমই ‘ভয়ংকর সুন্দরী’ হিসেবে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর্লি ভ্যারাইটি এ আম ভারতের মাদ্রাজ থেকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়ে আসছে। বেনাপোল-যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব ফলের দোকানে বিক্রি হচ্ছে রঙিন এ আম। রাসায়নিক পদার্থ মেশানো এ আমে মাছি বসছে না। পচছেও না। এ আম জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে জানা যায়, বেনাপোল সীমান্তের ওপারে পেট্রাপোল ও বনগাঁয় এ আম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ রুপি। বেনাপোলে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকা ও যশোরে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। এ আম পাচারের জন্য পেট্রাপোল সীমান্তে সন্ধ্যার পর বিএসএফ ‘লাইন’ দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লাইন দেওয়ার পর সবুজ সংকেত পেয়ে চোরাচালানিরা বেনাপোল চেকপোস্ট লাগোয়া রেল লাইন দিয়ে ভ্যানযোগে আম পাচার করে আনছে। জানা যায়, আম বোঝাই ছয়টি কার্টন মিলে একটি ৬০ কেজি ওজনের ‘ঢোব’ বাবদ বিএসএফ ৫০০ রুপি উৎকোচ নেয়। অভিযোগ রয়েছে, বিজিবির কিছু সদস্যও উৎকোচ নিয়ে থাকে। সীমান্ত পার হওয়ার পর এ আম যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়।
পেট্রাপোলের আম ব্যবসায়ী শম্ভু মণ্ডল বলেন, ‘এ আম মাদ্রাজ থেকে আসে। আমরা বনগাঁর গুদাম থেকে কিনে আনি। আমাদের কাছ থেকে বাংলাদেশের অনেকেই এ আম কিনে নিয়ে যায়।’
বনগাঁর ব্যবসায়ী মহাদেব ঘোষ বলেন, ‘রঙিন এ আম খুবই নিম্নমানের। আমরা এ আম খাই না।’ যশোর শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ে কয়েকটি দোকানে এ আম বিক্রি হচ্ছে। দোকানি সুজন মিয়া বললেন, ‘আমরা এ আম মনিহার এলাকার বাচ্চু মিয়ার আড়ত থেকে কিনে নিয়ে এসেছি। এ আমে কী ধরনের কেমিক্যাল আছে, তা আমাদের জানা নেই।’ যোগাযোগ করা হলে মাগুরা হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যান তত্ত্ববিদ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, রঙিন এ সুন্দরী আম পাকানো ও দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য ফরমালিন স্প্রে করা হয়। এ ছাড়া আর্লি ভ্যারাইটি এ আম পাকানোর জন্য কারবাইডও দেওয়া হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এ আম খেলে কিডনি, পাকস্থলী, যকৃত, পিত্তথলির ক্ষতি হতে পারে।’
এ আম পাচারের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিজিবির বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের কমান্ডার নায়েব সুবেদার হাফিজ বলেন, ‘আম পাচারের বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার কাছে নতুন তথ্য পেলাম। আমরা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব।’