পরির্বতন হচ্ছে ভোটদান পদ্ধতি : সিলের পরিবর্তে টিক

ecভোট গ্রহণের সময় মাত্রাতিরিক্ত ব্যালট পেপার নষ্ট হওয়ার কারণে সিলের পরিবর্তে এবার মার্কারের (কলম) ব্যবহার করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। টিক চিহ্নের মাধ্যমেই ভোটার তার মূল্যবান ভোটটি প্রদান করতে পারবেন। এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। তবে এখন পর্যন্ত  চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত  হয়নি। প্রথম পর্যায়ে স্থানীয় নির্বাচনে এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হতে পারে। বৃহস্পতিবার কমিশন বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কমিশন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


জানা যায়, ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে মাত্রাতিরিক্ত ব্যালট পেপার নষ্ট হওয়ার কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে ইসি।

এর আগে ৫টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যাপকহারে ভোট বাতিল হলে টিক চিহ্নের ব্যাপারটি আলোচনায় আসে। সে সেময় বিষয়টি কমিশন বৈঠকে আলোচনাও হয়। তবে বিষয়টি বেশিদূর গড়ায়নি। কিন্তু একইভাবে জাতীয় ও উপজেলা নির্বাচনে মাত্রাতিরিক্ত ভোট বাতিল হলে বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে এবং কমিশন বৈঠকে পর্যালোচনা হয়।

ইসি সূত্র জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টিক চিহ্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা না হলেও স্থানীয় সরকার নির্বাচন, যেমন ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার নির্বাচনে পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হতে পারে। এতে সফলতা পেলে জাতীয় নির্বাচনে মার্কার (কলম) দিয়ে টিক চিহ্নের ব্যবহার করবে ইসি।

সূত্র আরো জানায়, সিল মেরে ব্যালট পেপার ভাঁজ করার সময় এক পাশের কালি অন্য পাশে লেগে যায়। এতে ভোটারের ‍মূল্যবান ভোটটি নষ্ট হয়। যাতে ভোট নষ্ট না হয়, এ কারণেই টিক পদ্ধতি ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ইসি।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী পর্যায়ের এক সচিব বাংলামেইলকে বলেন, ‘জাতীয় ও উপজেলা নির্বাচনে ভোট প্রদানের সময় অনেক বেশি ব্যালট পেপার নষ্ট হয়েছে। আর এ কারণে কমিশন সিলের পরিবর্তে টিক চিহ্ন ব্যবহারের চিন্তা করছে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবারের কমিশন বৈঠকে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, কমিশন বৈঠক থেকে এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের কোন কোন দেশে এ পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হয়ে তাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এছাড়া সুবিধা অসুবিধাগুলো পর্যবেক্ষণ করেই নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

তবে এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনের পরিবর্তন আনতে হবে বলেও তিনি জানান।

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর (৩৪) বিধির (৭) উপ-বিধিতে বলা হয়েছে। ‘ব্যালট পেপার পাওয়ার পর যে প্রার্থীকে ভোট প্রদান করতে ইচ্ছুক, সেই প্রার্থীর প্রতীক সম্বলিত ব্যালট পেপারের সংশ্লিষ্ট স্থানটি প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক সরবারাহকৃত সীলমোহর দ্বারা চিহ্নিত করতে হবে এবং চিহ্নিত করার পর তা ভাঁজ করে ব্যালট বাক্সে প্রবেশ করাতে হবে।’

নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল থেকে জানা যায়, প্রথম দফায় ৪ লাখ ৫১ হাজার ৩৮৩টি ভোট বাতিল হয়। এছাড়া দ্বিতীয় দফায় ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৫টি, তৃতীয় দফায় ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৮৫৫টি, চতুর্থ দফায় ৩ লাখ ২ হাজার ৮২৮টি এবং পঞ্চম দফায় ৩ লাখ ১৭ হাজার ১১২টি ভোট নষ্ট হয়। এছাড়া দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ব্যাপক হারে ভোট বাতিল হয়।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend