ছাত্রলীগের একাংশের অবরোধ, অচল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

downloadআওয়ামী লীগের নেতা নাসির হায়দারকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত ছাত্রদের সনদ বাতিলসহ আট দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশের ডাকা অবরোধ অব্যাহত আছে। গতকাল শনিবার চতুর্থ দিনের মতো অবরোধে ক্যাম্পাস ছিল কার্যত অচল।

এদিকে দাবিদাওয়ার ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অবরোধ কর্মসূচি দুই সপ্তাহ স্থগিত রাখতে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে আন্দোলনকারীরা বলেছেন, এই আহ্বান লোক দেখানো। তাঁদের কর্মসূচি স্থগিত করা হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দপ্তরে জরুরি সভা হয়। সহ-উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক সৌরেন বিশ্বাস, অধ্যাপক ইমরান হোসেন, অধ্যাপক সুলতান আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলগুলোর প্রভোস্ট, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মো. শহিদুল্লাহ, এএসপি (সদর) মো. তারিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে সহ-উপাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই সপ্তাহ কর্মসূচি স্থগিত রাখতে আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করছি। এ সময়ের মধ্যে তাদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত ২১ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নেতারা এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে একটি স্মারকলিপি উপাচার্যের কাছে দিয়েছিলেন। পরে উপাচার্য স্মারকলিপিটি ২৩ এপ্রিল প্রক্টরের কাছে পাঠিয়ে দেন। আমি তা জানতাম না। স্মারকলিপিতে চট্টগ্রামের হাই প্রোফাইলের নেতাদের স্বাক্ষর রয়েছে। তাঁদের বাদ দিয়ে তো বিশ্ববিদ্যালয় চালানো সম্ভব নয়। আমরা শিগগিরই তাঁদের সঙ্গে বসব।’
প্রক্টর সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, ‘আমি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মুঠোফোনে কথা বলেছি। কিন্তু তারা আগ্রহ দেখাচ্ছে না। দেখি, পরে বলব—এভাবেই কথা বলছে।’
আন্দোলনকারীদের নেতা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি অমিত কুমার বলেন, ‘এখনো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার বিষয়ে কিছু বলেনি। আমাদের আন্দোলন চলছে, চলবে।’
এদিকে গতকালও টানা চতুর্থ দিনের মতো অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাচল করেনি শাটল ট্রেন ও শিক্ষক বাস। তাই কোনো ক্লাস-পরীক্ষাও হয়নি। গত ৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে ছাত্রলীগের একাংশের হাতে লাঞ্ছিত হন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির হায়দার। এ ঘটনার পর থেকে জড়িত ছাত্রদের শাস্তির দাবিতে তাঁর অনুসারীরা আন্দোলন করে আসছেন। জড়িত ছাত্রদের সনদ বাতিল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারসহ আট দফা দাবিতে গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেওয়ায় বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।
এদিকে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছাত্রলীগের ছয় কর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর। এই ছয় কর্মী হলেন রুবেল দে, সোহেল খান, কাউসার মিয়া, আসিফুজ্জামান, ফরহাদ হোসেন ও রাশেদ হোছাইন। তাঁদের মধ্যে রুবেল, আসিফুজ্জামান ও সোহেলকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend