ত্রিশোর্ধ্ব নারীরা সাবধান!
৩০ বছর কিংবা তার চেয়ে বেশি বয়সী নারীদের জন্য সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকি ব্যায়াম না করা বা শারীরিক পরিশ্রম না করা। নতুন এক গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বয়স ত্রিশের কোঠায় পৌঁছেছে কিন্তু ব্যায়াম করছেন না বা পর্যাপ্ত পরিমাণে শারীরিকভাবে সক্রিয় নন এমন নারীরা সহজেই হূদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। ত্রিশের কোঠায় থাকা মানুষেরা শরীরচর্চার পরামর্শ মেনে চললে শুধু অস্ট্রেলিয়াতেই প্রতিবছর তিন হাজার প্রাণ বাঁচানো যেত বলেও জানিয়েছেন গবেষকেরা। বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
এ গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করে ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ওজন বেড়ে যাওয়া বা মুটিয়ে যাওয়াসহ অন্যান্য কারণের মতোই ব্যায়াম না করা বা শারীরিক পরিশ্রম না করা নারীদের হূদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বড় ঝুঁকিগুলোর একটি। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল ১৯২০, ১৯৪০ ও ১৯৭০-এর দশকে জন্মগ্রহণকারী প্রায় ৩০ হাজার নারীর স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে ওই গবেষণা পরিচালনা করেন।
গবেষকেরা দেখতে পেয়েছেন, ত্রিশের চেয়ে কম বয়সে নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে অন্যতম হলো ধূমপান করা। বয়স বাড়তে থাকলে অনেক তরুণীই ধূমপান ছেড়ে দেন। কিন্তু তাঁদের বেশির ভাগই শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার দিকে ধাবিত হন। আর এ সময়েই নারীদের হূদরোগে আক্রান্ত ঝুঁকিতে প্রধান হয়ে ওঠে ব্যায়াম না করা বা শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া।
কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যায়াম, শারীরিক সক্রিয়তা এবং স্বাস্থ্য গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক ওয়েনডি ব্রাউন বিবিসিকে বলেন, ‘মধ্য বয়সী নারীদের শারীরিকভাবে সক্রিয় রাখতে আমাদের আরও অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।’ এ বয়সী নারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট ব্যায়াম করুন, আপনি নিজেই নিজের স্বাস্থ্যের দারুণ উন্নতি বুঝতে পারবেন এবং আপনার হূদরোগের ঝুঁকিও প্রায় অর্ধেক কমে যাবে।’
এ গবেষণা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের সিনিয়র কার্ডিয়াক নার্স থেমবি নাকালা বলেন, এ গবেষণায় দারুণভাবে এটা উঠে এসেছে যে শরীরচর্চা না করা বা শারীরিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকাটা নারীদের মধ্যে হূদরোগের একটা অন্যতম প্রধান কারণ। তবে একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন যে, শুধু শরীরচর্চা করলেই হবে না, মনে রাখতে হবে যে মুটিয়ে যাওয়া, ধূমপান করা, কোলেস্টরল বেড়ে যাওয়া এবং উচ্চ রক্তচাপ থেকেও হূদরোগ হয়ে থাকে।