উত্ত্যক্তে বাধা দেওয়ায় মামাকে মারধর ; দুই ছাত্রীর বিষপান, একজনের মৃত্যু
উত্ত্যক্তকারীরা মামাকে মারধর করায় ক্ষোভে-দুঃখে দুই স্কুলছাত্রী বিষপান করেছে৷ এতে এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে৷ অন্যজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে৷ গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাটোরের লালপুর উপজেলার মানিকহার গ্রামে এই ঘটনা ঘটে৷লালপুর থানা-পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার দুপুরে মানিকহার গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল্লাহর মেয়ে অাঁখি খাতুন (১৩), আরেক ছাত্রী (১৪) ও ছাত্রীর মামা (দশম শ্রেণীর ছাত্র) একসঙ্গে বরমহাটি উচ্চবিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় ভবানীপুর গ্রামের শিশির হোসেন (১৮) ও কালুপাড়া ইয়ার কলোনির ফরহাদ আলী (২০) অাঁখি ও ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করেন। ছাত্রীর মামা এর প্রতিবাদ করলে পরদিন সোমবার দুপুরে শিশির ও ফরহাদ কয়েকজন সহযোগী নিয়ে বরমহাটি স্কুল মোড়ে গিয়ে ছাত্রীর ওই মামা ও মামার আরেক ভাইকে মারধর করেন। এ ঘটনা জানার পর ছাত্রীর মা ছাত্রীকে বকাঝকা করেন। এ ঘটনায় ছাত্রীটি মঙ্গলবার সারা দিনই মন খারাপ করে বাড়িতে বসে থাকে৷ বিকেলে সে অাঁখিদের বাড়িতে যায়। সেখানে সন্ধ্যার দিকে তারা দুজনেই মামাকে মারধরের ঘটনায় ক্ষোভে-দুঃখে একসঙ্গে কীটনাশক পান করে৷ বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাদের রাতেই লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বুধবার ভোরে অাঁখি মারা যায়৷ আরেক ছাত্রীর চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনায় লালপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়াই অাঁখির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়৷ ঘটনার পর থেকেই শিশির ও ফরহাদ পলাতক রয়েছেন৷
চিকিৎসাধীন ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ে বরমহাটি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীতে এবং অাঁখি সপ্তম শ্রেণীতে পড়ালেখা করত। প্রতিদিন তারা একসঙ্গে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করত৷ শিশির ও ফরহাদ কয়েক দিন ধরে রাস্তায় তাদের উত্ত্যক্ত করছিল। মানসম্মানের ভয়ে আমরা ঘটনাটি পুলিশকে জানাইনি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিভাবকেরা মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার বিষয়ে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। তাই আমরা প্রধান শিক্ষককে ঘটনা জানাইনি।’বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওরা দুজনই বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী৷ তারা তাদের সমস্যার কথা আমাকে কখনো বলেনি।’
লালপুর থানার ওসি আবদুল হাই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়নি৷ অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।