ঝিনাইগাতীতে আশ্রয়নের বাসিন্দারা নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত
ঝিনাইগাতী (শেরপুর) সংবাদদাতা: শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার কান্দুলী আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। এ আশ্রয়ন প্রকল্পে নারী-পুরুষ শিশুসহ প্রায় ৫শতাধিক লোকের বসবাস। অভাব, অনটন, দুঃখ আর দুর্দশাই এদের নিত্য দিনের সাথী। ১৯৯৯ সালে ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের, কান্দুলী গ্রামে সাড়ে ৭ একর সরকারী খাস জমির উপর একটি পুকুরসহ ৬ টি ঘর নির্মাণ করা হয়। ওই ৬টি ঘরে ৬০টি কক্ষ রয়েছে। প্রতিটি কক্ষে ১টি করে ছিন্নমূল ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়। আশ্রয়নের বাসিন্দারা জানান, অনেক সমস্যার আবর্তে ছিল আশ্রয়ন প্রকল্পে ৬০টি পরিবার। কর্মসংস্থান ও জীবিকার সন্ধানে ৩০টি পরিবার পাড়ি জমিয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। শত অভাব অনটন দুঃখ আর দুর্দশা বুকে চেপে রেখে ৩০টি পরিবার রয়েছে আশ্রয়নে। বর্তমানে ওই ৩০টি পরিবারে রয়েছে কয়েক শতাধিক লোক। তারা আরো বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পটি নির্মানের পর কেউ আর তাদের খোঁজ খবর নেয়নি। সবাই দিন মজুরি করে পরিবারের সদস্যদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। বছরে ২/৩ মাস কৃষির উপর শ্রম বিক্রি করে বাকি সময় তাদের থাকতে হয় বেকার। সরকারী কোন সাহায্য সহযোগিতা পায় না তারা। আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলো ভেঙ্গে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টিপাতেই তলিয়ে যায় ঘরের মেঝেগুলো। এখানে বসবাসকারীদের যাতায়াতের রাস্তা নেই। নলকূপগুলো অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় এখানে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির অভাব। রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে লোকজনের যাতায়াতের দুর্ভোগের পাশাপাশি শিশুরা স্কুলে যেতে পারে না। প্রকল্পের ভিতরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। খাদ্যের অভাবে স্বাস্থ্যহীনতায় ভূগছে নারী -পুরুষ ও শিশুসহ আশ্রয়নবাসীরা। সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে তাদের এসব অর্র্বণীয় দুঃখ আর দুর্দশার কথা প্রত্যক্ষ করা গেছে। এ আশ্রয়ন প্রকল্পে নেই কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । ফলে দরিদ্র পরিবারের শিশু কিশোররা শিা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আশ্রয়নের বাসিন্দাদের অভিযোগ জনপ্রতিনিধিদের কাছে ভিজিডি কার্ড চাইতে গেলে তারা পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ চায়। দিতে না পারায় আশ্রয়নবাসীর ভাগ্যে জুটেনা ভিজিডি কার্ড থেকে শুরু করে সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা। আপে করে তারা বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের হাজারও সমস্যা সমাধানের জন্য বহু আবেদন নিবেদন করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ১৪ বছরেও এর কোন সমাধান‘ হয়নি। আশ্রয়নবাসীরা অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে। ধানশাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৩ মাস পূর্বে উপ-নির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। আমার হাতে সুযোগ এলে আশ্রয়বাসীদের অধিকার সংরক্ষণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আশ্রয়নের সমস্যা গুলো প্রাক্কলন তৈরী করে সংশ্লিষ্ট্য মন্ত্রানালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই সমস্যা গুলো সমাধান করা হবে।