জটিল অ্যাজমা ও তার প্রতিকার
হাঁপানি খুব পুরনো রোগ এবং পৃথিবীজুড়ে বেশ বড় স্বাস্থ্য সমস্যার মধ্যে একটি। যদিও আমরা হাঁপানি রোগের কারণ জানি ও উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতিতে চিকিৎসা দিতে পারছি। তবুও দিন দিন এর প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। আমেরিকার জরিপে ১৯৩০-১৯৮৭ সাল পর্যন্ত হাঁপানির প্রাদুর্ভাব ২৯%-৫৭%। উত্তর আমেরিকা-ইউরোপের জনসংখ্যার ৫-৭% হাঁপানি দ্বারা আক্রান্ত। বাংলাদেশের ৭০ লাখ লোক হাঁপানিতে আক্রান্ত। এর মধ্যে শিশু ৪০ লাখ। জটিল হাঁপানির প্রাদুর্ভাব কম হলেও বর্তমানে তা হাঁপানির ৫%।
কথাগুলো বলছিলেন ডা. মোহাম্মদ তৌফিক হাসান। তিনি জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মেডিসিন, বক্ষব্যাধি ও অ্যাজমা রোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আরিফুর রহমান
সাপ্তাহিক: হাঁপানি রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কোন কোন ওষুধ কার্যকরি ভূমিকা পালন করে থাকে? আর জটিল হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে কী ধরনের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন?
ডা. মোহাম্মদ তৌফিক হাসান: জটিল হাঁপানি নির্ণয় করা খুব কষ্টকর। চিকিৎসা করা হতাশাজনক। সাধারণত সালবিউটামল ও ঝঃবৎড়রফ রহযধষবৎ দিয়ে চিকিৎসার মাধ্যমে হাঁপানি রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
কিন্তু কিছু কিছু হাঁপানি রোগীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মাত্রায় হাঁপানির চিকিৎসা দেয়ার প্রয়োজন পড়ে এবং সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়ার পরও রোগের লক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হয়। বারবার হাঁপানির মাত্রা বাড়তে থাকে, শ্বাসনালি পুরোপুরি সংকুচিত হয়ে থাকে, যদিও বা রোগী হাঁপানির চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ধাপ পেয়ে থাকে।
জটিল হাঁপানি বিভিন্ন নামে পরিচিত।
সাপ্তাহিক: জটিল হাঁপানি রোগের লক্ষণসমূহ কী হতে পারে?
ডা. মোহাম্মদ তৌফিক হাসান: নিন্মে সেগুলো বলছি-
১. দীর্ঘকালীন মাত্রাতিরিক্ত শ্বাসনালির সংকোচন।
২. খুব তাড়াতাড়ি ফুসফুসের কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়া।
৩. অতিরিক্ত সঁপঁং তৈরি হওয়া।
৪. জটিল হাঁপানির সংজ্ঞা হচ্ছে- যে হাঁপানির রোগীরা সার্বক্ষণিক অথবা প্রায় সার্বক্ষণিক বড়ি খেয়ে যাচ্ছেন এবং প্রতিদিন উচ্চ মাত্রার তাকে জটিল হাঁপানি বলে।
সাপ্তাহিক: এক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় কীভাবে করে থাকেন?
ডা. মোহাম্মদ তৌফিক হাসান: প্রথমে রোগীর ফুসফুসে জটিল প্রদাহ আছে কিনা, তা দেখে নিতে হবে।
সাপ্তাহিক: রোগ নির্ণয়ে রোগীর কী কী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকেন?
ডা. মোহাম্মদ তৌফিক হাসান: আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে থাকি।
সাপ্তাহিক: কীভাবে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন?
ডা. মোহাম্মদ তৌফিক হাসান: আমরা চিকিৎসা করে থাকি সাধারণত-
১. সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করার পর।
২. ইনহেলার নেয়ার পদ্ধতি ঠিক আছে কিনা, সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করি।
৩. রোগীর অন্য কোনো মানসিক ব্যাধি আছে কিনা, তা যাচাই করা।
৪. সর্বোপরি হাঁপানির সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়া।
যদিও জটিল হাঁপানি রোগী সংখ্যায় কম। কিন্তু সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় না করতে পারায় জটিল হাঁপানি রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। ক্রমশ তাদের হাসপাতালে ভর্তি থাকার প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই জটিল হাঁপানি নীরব ঘাতক। আসুন আমরা এখন হতেই হাঁপানির সুনির্দিষ্ট চিকিৎসায় সচেষ্ট হই।