‘লাশ না পাইলে আমিও এইখানে মরুম’
‘লাশ না পাইলে বাড়ি যাইতাম না। সরকারের টাকা আমার দরকার নাই। আমার পোলার লাশ দিক। লাশ না পাইলে আমিও এইখানে মরুম।’
কথাগুলো বলছিলেন মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চ এমভি মিরাজ-৪-এর নিখোঁজ যাত্রী জুলহাসের খালা নাজমা বেগম। তিনি শরীয়তপুরের সুরেশ্বর এলাকার বাসিন্দা। বোনের ছেলে জুলহাসকে নিজের সন্তানের মতোই লালনপালন করেছেন তিনি।
নাজমা বেগমের মতো গজারিয়ায় মেঘনা নদীর তীরে জড়ো হওয়া অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ স্বজনের সন্ধান ও লাশের দাবিতে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন। উদ্ধারকাজের ধীরগতির কারণে অসন্তোষ সৃষ্টি হওয়ায় স্বজন হারানোর শোক ছাপিয়ে ক্রমেই দানা বাঁধছে ক্ষোভ।
আজ শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে দিনভর দফায় দফায় বিক্ষোভ করছেন তাঁরা। নির্ঘুম রাতযাপন ও সারা দিন তপ্ত সূর্যের নিচে উত্কণ্ঠায় কাটানোর পর সন্ধ্যায় অনেকেই ক্লান্তিতে ভেঙে পড়েন। কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়ার পর সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে স্বজনেরা একত্র হয়ে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তাঁরা ‘লাশ চাই, লাশ চাই’ বলে স্লোগান দেন।
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার মেঘনা নদীতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝড়ের কবলে পড়ে তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় এমভি-মিরাজ-৪।
লঞ্চটি ঢাকার সদরঘাট থেকে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর যাচ্ছিল।
দুর্ঘটনার পর থেকে আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত মোট ২৮টি লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে প্রথম আলোকেজানিয়েছেন মুন্সিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) জাকির হোসেন মজুমদার।