গাজীপুরের অপহৃত ব্যবসায়ী দু’দিন পর শেরপুর থেকে উদ্ধার
গাজীপুর থেকে অপহরণের দু’দিন পর মো. সুমন মিয়া (২৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করেছে শেরপুর থানা পুলিশ। ১৭ মে শনিবার ভোররাতে সদর উপজেলার চরাঞ্চল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। সে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর বালিয়াপাড়া গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে। জয়দেবপুর থানার এসআই হাফিজুর রহমান ও অপহৃত ব্যবসায়ী জানান, গাজীপুর মহানগরের মালেকের বাড়ি পুকুর পাড় এলাকায় সুমন মিয়া বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে তিনি একটি দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে ‘সুমন ভ্যারাইটিজ স্টোর’ নামের একটি মুদি দোকান করে ব্যবসা করছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে ছোট ভাই মিজানকে দোকানে রেখে সুমন গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে ভোর ৬ টার দিকে বাসে চড়ার জন্য পায়ে হেটে গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা মোড় অতিক্রমের সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি এসে সামনে দাঁড়িয়ে সুমনের সঙ্গে করমর্দন (হ্যান্ডশেক) ও কোলাকুলি করে। এরপরই সুমন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাকে অপহরণ করে শেরপুর জেলা সদরের মোকসেদপুর নয়াপাড়ার চরে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাকে একটি ছাপড়া ঘরে আটকে রাখে অপহরণকারীরা। সন্ধ্যায় জ্ঞান ফেরার পর অপহরণকারীরা মুক্তিপণের দাবিতে ব্যবসায়ীকে চাপ দেয়। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে অপহরনকারীরা সুমনের মোবাইল ফোন থেকে তার ছোট ভাই মিজানের ফোনে কল করে বলে, সুমনকে অপহরণ করা হয়েছে, তাকে ছাড়িয়ে নিতে হলে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। এ ঘটনায় ওই রাতেই অপহৃতের ছোট ভাই জয়দেবপুর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন। জয়দেবপুর থানা পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিং করে অপহরণের প্রায় দু’দিন পর শনিবার ভোররাত ২টার দিকে শেরপুর ও জামালপুর জেলার সীমান্ত এলাকার শেরপুর জেলা সদরের মোকসেদপুর নয়াপাড়ায় ব্র²পূত্র নদীর চরে অভিযান চালায়। এসময় ওই চরের একটি ছাপড়া ঘর থেকে অপহৃত সুমনকে পুলিশ উদ্ধার করে। তবে এঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ শনিবার বিকেল পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলণে অপহৃত ব্যবসায়ী সুমনকে উদ্ধারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জেলার জয়দেবপুর থানায় গত ৭মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত অপহরণের ঘটনায় মোট ১০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দায়েরকৃত এসব মামলার মধ্যে প্রেমঘটিত কারণে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও রয়েছে। গাজীপুর জেলা পুলিশের ‘এন্টি কিডনাপিং স্কোয়াড’ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে ওইসব মামলার ৯জন ভিকটিমকে সুস্থ্য অবস্থায় উদ্ধার করেছে। অপর মামলার একজন ভিকটিমকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। তবে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। সংবাদ সম্মেলণে ভিকটিম ব্যবসায়ী সুমন ও স্কুল ছাত্রী অধরা ইসলাম তন্বীসহ আটক আল আমিন হোসেন আগমনকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।