‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেও নষ্ট করে দিতে চেয়েছিলেন জিয়া’
দেশের মাটি থেকে মুক্তিযুদ্ধের চিহ্ন ও চেতনাকেও নষ্ট করে দেওয়াসহ আওয়ামী লীগের নাম নিশানা মুছে দিতে চেয়েছিলেন প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
নিজের ৩৩তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শনিবার গণভবনে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাতে রাতে কারফিউ জারি করে দেশ চালাতেন জিয়াউর রহমান। দেশে ফেরার পর ৩২ নম্বর বাড়িটিতে পর্যন্ত যেতে দেননি তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সেনাবাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের একের পর এক হত্যা করা হয়। জিয়াউর রহমান একসঙ্গে সেনা প্রধান ও রাষ্ট্র প্রধানের ভূমিকায় থেকে এসব হত্যাকণ্ড ঘটান। ১৮ থেকে ১৯ বার সেনাবাহিনীতে ক্যু হয়। তার আশ্রয় প্রশ্রয়েই দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উত্থান ঘটেছে।
ইতিহাসের করুণ ও বিপর্যস্ত সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। তার দুচোখ বেয়ে নেমে আসে অশ্রু।
কান্নাভাঙ্গা কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, যেদিন দেশে ফিরি সেদিন লাখো মানুষের ঢল ছিলো, তাদের ভালোবাসা ছিলো। কিন্তু ছিলো না সেই ভালোবাসার মানুষগুলো যাদের ভালোবাসাই সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশিত।
তিনি বলেন, সবাইকে রেখে দেশ ছেড়েছিলাম কিন্তু ফিরে এসে দেখি কেউ নেই। বনানী কবরস্থানে সারি সারি কবর।
৩২ নম্বরের সামনে লেকের পাড়ে বসে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে দিতাম। এযে কত বড় কষ্টের তা ভুক্তভোগী মানুষটিই বলতে পারবে, বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এর মাঝেও একটা চিন্তা মাথায় কাজ করতো, আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে হবে, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। এই চেতনাই তখন সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে ওঠে। প্রতিটি পদে পদে বাধা ছিলো, কিন্তু তা অনেক সহ্য করেছি কিন্তু সাহস হারাইনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জাতির পিতার কন্যা, এর চেয়ে আর কোনো পরিচয় আমার প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষকেই মহান আল্লাহ কিছু কাজ দিয়ে পাঠান। আমাকেও তিনি যে কাজটি দিয়েছেন তা আমি পালন করে যেতে চাই। আর সাহসের সঙ্গে তা করে গেলে আল্লাহই আমাকে রক্ষা করবেন।
আমার বাবার স্বপ্ন ছিলো দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, আমারও একই স্বপ্ন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি মহান আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথানত করবো না। বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করেই চলবো।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর কন্যা তার কাছ থেকেই শিখেছি দেশকে ও দেশের মানুষকে কিভাবে ভালোবাসতে হয়। মা ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বাবা যখন জেলে থাকতেন তখন মাকেই দেখেছি দল সামলাতে। তার কাছ থেকেই আমরা শিক্ষা নিয়েছি।%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE#sthash.pi43eum9.dpuf