বিফল হাসিনা-খালোদার ফোনালাপ: মোদি এখনো বাংলাদেশ বিদ্বেষী!
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পাওয়ার পর জাতীয় ও রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাদেশের প্রধান দু’দল- আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নিজ নিজ পন্থায় সেখানের ভাবি নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন, চেষ্টা করছেন সম্পর্ক উন্নয়নের। কিন্তু বাংলাদেশ নিয়ে বিজেপির অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
দৈনিক কালের কণ্ঠ তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বগেম খালেদা জিয়ার মোদিকে করা টেলিফোন কোনো কাজেই আসেনি। বাংলাদেশ নিয়ে বিজেপির অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হয়নি। উপরন্তু ভারতের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েকটি চুক্তিবিরোধী অবস্থান সুস্পষ্ট করেছে বিজেপি।
পত্রিকাটি জানায়, দিল্লির কাছে ঢাকার প্রধান যেসব প্রত্যাশা রয়েছে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের জন্য সেগুলো হয়তো পূরণ করা সহজ হবে না। তা সত্ত্বেও মোদিকে অভিনন্দন জানান হাসিনা। ওই টেলিফোনের পর বিজেপি তাদের বিরোধী অবস্থানটা দৃঢ়ভাবেই পুনর্ব্যক্ত করল।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় দুই রাষ্ট্রের সরকারের মধ্যে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তার বিপরীতে নিজেদের অবস্থান সুস্পষ্ট করেছে বিজেপি। হাসিনা ও তাঁর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স সরকারের ব্যর্থতায়ও হতাশ। ভারতের পার্লামেন্টে চুক্তিটি দৃঢ়ভাবে অনুমোদন পাবে, এমন আশা করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু, মূলত বিজেপি ও আঞ্চলিক অসম গণপরিষদের বিরোধিতার কারণেই সেটা সম্ভব হয়নি।
আসামের বিজেপি ইউনিটের প্রেসিডেন্ট সর্বনন্দ সোনোওয়াল বলেন, ‘আমি নিশ্চিত বাংলাদেশকে আসামের ভূমি অন্যায্যভাবে দিয়ে দেওয়ার চুক্তি কখনোই দৃঢ়ভাবে অনুমোদন করবে না বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার।’ এদিকে নতুন লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) ৩৪ জন পার্লামেন্ট সদস্য থাকায়, মোদি সরকারের পক্ষে ভারত-বাংলাদেশ তিস্তা পানি-বণ্টন চুক্তির ব্যাপারেও পুনরায় আলাপ-আলোচনা শুরুটা কঠিন হবে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটি থেকে এবার পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত বিজেপির সর্বনন্দ সোনোওয়াল বলেন, বিজেপি এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, ভারত-বাংলাদেশ ভূমি চুক্তি বিশেষত আসাম ও সার্বিকভাবে পুরো দেশের জন্যই ক্ষতিকর হবে। তিনি বলেন, এটা নিয়ে কোন পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই। ১৯৭৪ সালের ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ স্থল-সীমান্ত চুক্তি ও ২০১১ সালে সংযোজিত আরো কয়েকটি বিষয়ে পার্লামেন্টে অনুসমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। আর সেটা আসামে বিজেপির সমর্থন বাড়াতে সাহায্য করে। কংগ্রেসকে আক্রমণের হাতিয়ার হিসেবেই এটাকে ব্যবহার করছিল বিজেপি। তাতে আসামের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন পায় বিজেপি। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে অভিবাসনিবিরোধী অবস্থানও বিজেপির সমর্থন বাড়াতে সহায়তা করে।